ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ইসলামে নারী-পুরুষের সোনা ব্যবহার নিয়ে যা বলা হয়েছে

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম

সোনা মানবজীবনের শৌখিন অলংকারগুলোর অন্যতম। যুগে যুগে মানুষ সোনাকে সম্পদ, সৌন্দর্য ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখেছে। তবে ইসলামে পুরুষ ও নারীর জন্য সোনা ব্যবহারের বিধান আলাদা। নারীদের জন্য সোনা ব্যবহার বৈধ হলেও, পুরুষদের জন্য তা স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

বিখ্যাত সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, একবার আল্লাহর রাসুল (স.) এক সাহাবির হাতে সোনাের আংটি দেখে তা খুলে ছুড়ে ফেলে বললেন-  يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ إِلَى جَمْرَةٍ مِنْ نَارٍ فَيَجْعَلُهَا فِي يَدِهِ আপনাদের অনেকে জাহান্নামের জ্বলন্ত অঙ্গার হাতে পরিধান করেন!

আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওই জায়গা থেকে চলে যাওয়ার পরই সাহাবিকে বলা হলো, আংটিটি তুলে নিয়ে অন্য কাজে লাগান। সাহাবি বললেন, না, আল্লাহর কসম! যে বস্তু রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফেলে দিয়েছেন তা আমি কখনোই আর নেবো না। (মুসলিম: ২০৯০)

হযরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يَلْبَسْ حَرِيرًا وَلَا ذَهَبًا

যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ এবং আখেরাতে ঈমান রাখে, সে যেন রেশমি কাপড় বা সোনা ব্যবহার না করে। (মুসনাদে আহমদ: ২২২৪৮)

পুরুষদের জন্য সোনা পরা ইসলামে স্পষ্টভাবে হারাম। এটি শুধু কোরআনের ব্যাখ্যাই নয়, বরং বহু সহিহ হাদিসে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে এসেছে।

হযরত আলী (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (স.) আমার ডান হাতে সোনার আংটি পরা দেখে তা খুলে ফেলে দেন এবং বলেন, ‘পুরুষের জন্য এটি নিষিদ্ধ।’ চার ইমামসহ ইসলামের প্রধান মাজহাবগুলোও পুরুষদের জন্য সোনা পরার অনুমতি দেননি।
 
অন্যদিকে রুপার আংটি পরা ইসলামে বৈধ, এমনকি এটি নবী করিম (স.)-এর সুন্নত। রসুলুল্লাহ (স.) একটি রুপার আংটি পরতেন, যাতে মুহাম্মাদ রসুলুল্লাহ খোদাই করা ছিল। সাহাবারাও এ আমল অনুসরণ করতেন। তাই আজও অনেক মুসলিম পুরুষ রুপার আংটি পছন্দ করেন।

পুরুষের গলায় চেইন, কানে দুল, হাতে ব্রেসলেট বা পায়ে পায়েল পরা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারণ এসব অলংকার নারীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো জাতির অনুকরণ করে, সে সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত। নারীর সাজসজ্জা অনুকরণ পুরুষদের জন্য হারাম বলে গণ্য করা হয়। ফলে এ ধরনের অলংকার পরা ইসলামের দৃষ্টিতে অনুচিত ও নিষিদ্ধ।

এক সাহাবি একবার পিতলের আংটি পরে নবী করিম (স.)-এর সামনে এলে তিনি বললেন, তোমার থেকে মূর্তির গন্ধ পাচ্ছি কেন? সাহাবি তা খুলে ফেলেন। পরে তিনি লোহার আংটি পরে আসলে নবী (স.) বলেন, ‘আমি তোমাকে জাহান্নামিদের অলংকার পরা অবস্থায় দেখছি।’ তখন সাহাবি জানতে চান, কী ধরনের আংটি পরা উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, এক মিসকাল (প্রায় ৪.৩৭ গ্রাম)-এর কম রুপার আংটি ব্যবহার করো।(আবু দাউদ: ৪২২৩, তিরমিজি: ১৭৮৫, নাসায়ি: ৫১৯৫)। 

LH/FJ
আরও পড়ুন