ঢাকা
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র ১৫ বছর ধরে অচল, ঝুঁকিতে দক্ষিণাঞ্চল

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) স্থাপিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রটি (সিসমোগ্রাফ) দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অচল হয়ে পড়ে আছে। প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এই যন্ত্রটি অকেজো থাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পসহ কোনো কম্পনেরই সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তির আওতায় দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুটি জেলা শহরে স্থায়ীভাবে এই সিসমোগ্রাফ যন্ত্র স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১০ সালের অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে যন্ত্রটি স্থাপনের পর মাত্র দুটি ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়। এরপর ২০১১ সালের জানুয়ারিতে যন্ত্রটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে একাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড চেম্বারে ইন্টারনেট সংযোগসহ এটি পুনরায় চালু করা হয়। কিন্তু চালুর এক বছর না যেতেই যন্ত্রটি আবারও পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূকম্পনের ফলে প্রাইমারি, সেকেন্ডারি, সারফেস এবং রেলি এই চারটি ওয়েভ সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ওয়েভ দ্রুত ছড়ালেও সারফেস এবং রেলি ওয়েভ পৌঁছাতে কিছুটা সময় নেয়। সিসমোগ্রাফ যন্ত্রটি ২৪ ঘণ্টা মনিটর করা হলে সারফেস ও রেলি ওয়েভ আঘাত হানার এক-দুই মিনিট আগেই সতর্কবার্তা পাওয়া সম্ভব, যা জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া যন্ত্রটির ভূগর্ভস্থ প্লেটের মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ভূমির অবস্থান বা ভূ-প্রকৃতির পরিবর্তন (উত্থান-পতন) পর্যবেক্ষণ করাও সম্ভব।

সিসমোগ্রাফটির তদারকির দায়িত্বে থাকা পবিপ্রবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুনীবুর রহমান বর্তমানে শিক্ষা ছুটিতে জার্মানিতে রয়েছেন।

এ বিষয়ে একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি অনেক পুরোনো প্রযুক্তির একটি অ্যানালগ মেশিন। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আধুনিক ডিজিটাল মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। সিসমোগ্রাফটি যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্পের আওতাধীন, তাই এর কার্যকারিতা বা মেরামতের বিষয়ে তারাই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’

DR
আরও পড়ুন