যুক্তরাজ্য থেকে ১৫ বাংলাদেশিকে ফেরত

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে বিশেষ চার্টার ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান তারা। এর আগে ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাত ৯টায় লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায় এবং পাকিস্তানের ইসলামাবাদ হয়ে ঢাকায় অবতরণ করে।

লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনসুলার শাখা এই অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে। ফেরত আসা ব্যক্তিদের কেউ বৈধ পাসপোর্টধারী, কেউ মেয়াদোত্তীর্ণ, আবার কারও পাসপোর্টই ছিল না। যাদের পাসপোর্ট ছিল না, তাদের ইন্টারভিউ নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে ট্রাভেল পারমিট দেওয়া হয়।

ফেরত পাঠানোদের বেশিরভাগই ছিলেন সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ঢাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। অনেকে দেশটিতে ওয়েটার বা অনানুষ্ঠানিক পেশায় নিযুক্ত ছিলেন, কেউ কেউ শিক্ষার্থী বলেও জানানো হয়েছে। ফ্লাইটে থাকা ৬ জনের কোনো নির্দিষ্ট পেশা ছিল না এবং কেউ কেউ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন।

যুক্তরাজ্যের হোম অফিস ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ হাইকমিশন দ্রুত ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রস্তুত করে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করে।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক বাংলাদেশিই ভিসা শেষে অবৈধভাবে অবস্থান করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে সচেতনতার অভাব, মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং অবৈধ উপায়ে অভিবাসনের প্রবণতাও এই সমস্যার মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্বজুড়ে অভিবাসন নীতির কঠোরতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে। যুক্তরাজ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকেও বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে অভিবাসন বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়েছে এবং শরণার্থী ও অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে দেশটির সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিচ্ছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বিদেশে অবৈধ প্রবেশ বা অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান। একই সঙ্গে বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম করতে এবং অবৈধতার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার কথাও বলা হয়েছে।

কূটনীতিকদের মতে, যদি এ প্রবণতা অব্যাহত থাকে, আগামী মাসগুলোতে আরও অনেক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। তাই সময় থাকতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বিদেশ যাওয়া থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে।