ঢাকা সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চ এর মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে শোক ও তীব্র ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ছাত্রজনতার ঢল নামে। মুহুর্মুহু স্লোগান আর প্রতিবাদে পুরো এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ছাত্রজনতার জনস্রোতে শাহবাগ মোড়ে কানায় কানায় ভরপুর। সবাই ওসমান হাদির জন্য দোয়া করছেন এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর পর রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল নিয়ে আসছেন ছাত্রজনতা। সবাই ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তিকে রুখে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন। সেইসঙ্গে খুনিদের যথাযথ বিচার করার কথা বলছেন।
এসময় ছাত্রজনতা ‘তুমি কে আমি কে হাদি হাদি’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, গুলির মুখে কথা কবো’, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ’ভারতীয় শক্তি এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জন ও হাদির চিকিৎসায় যুক্ত ডা. আব্দুল আহাদ।
তিনি জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের নিউরো সার্জিক্যাল টিম তার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৯টার দিকে হাদি মারা যান বলেও জানান তিনি।
এরপরই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল ফেটে পড়ে পুরো দেশ। গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত ছাত্রজনতার জনস্রোত রয়েছে শাহবাগে।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
ওইদিন মোটরসাইকেলে করে এসে দুইজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানা যায়, গুলি ওসমান হাদির মাথার ডান দিক থেকে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে, তবে গুলির অংশবিশেষ এখনও তার ব্রেনে রয়েছে।