রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে সেমস-গ্লোবাল ও জিআইজেড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘ইনোভেশনস অ্যান্ড পার্টনারশিপস ফর সাসটেইনেবল এনার্জি ট্রানজিশন’ শীর্ষক একটি ফ্ল্যাগশিপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দিনব্যাপী এই সম্মেলনে দেশের জ্বালানি খাতকে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করার লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ, উদ্ভাবন এবং দায়িত্বশীল বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এই সম্মেলনটি ‘২৭তম পাওয়ার সিরিজ অফ এক্সিবিশনস’-এর অংশ হিসেবে আয়োজিত হয়, যার মধ্যে ২৭তম পাওয়ার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক এক্সপো ২০২৫, ২২তম সোলার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক এক্সপো ২০২৫ এবং ৭ম ঢাকা আন্তর্জাতিক লাইটিং এক্সপো ২০২৫ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সেমস-গ্লোবালের এই প্রদর্শনী সিরিজকে দেশের শক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও আলোক প্রযুক্তি খাতের বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, নীতিনির্ধারক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাবিদ এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে একটি নিম্ন-কার্বন, জ্বালানি-দক্ষ ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিড-ইন্টিগ্রেশন, শিল্প খাতে জ্বালানি দক্ষতা, ই-মোবিলিটি এবং সবুজ দক্ষতা উন্নয়নে জার্মানির দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
সম্মেলনে মোট চারটি থিমেটিক সেশনে জ্বালানি রূপান্তরের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
সকালের প্রথম সেশনে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কুলিং প্রযুক্তি এবং শিল্প খাতে জ্বালানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় সেশনে বিশ্বব্যাংক, ব্র্যাক ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা সবুজ অর্থনীতিতে যুবকদের অংশগ্রহণের জন্য শিল্পভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
দুপুরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সেশনে ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণে বেসরকারি বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক মডেলের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়।
শেষ সেশনে সিটি ব্যাংক, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি, আইবি ভগট এপ্যাক, বিইপিডিবি এবং এইচঅ্যান্ডএম-এর প্রতিনিধিরা শিল্পে স্বল্প খরচে নির্ভরযোগ্য সবুজ জ্বালানি নিশ্চিতে সিপিপিএ-এর ভবিষ্যৎ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
আলোচনার সারসংক্ষেপে বলা হয়, সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বাংলাদেশকে একটি টেকসই ও স্থিতিস্থাপক জ্বালানি ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
সম্মেলনের শেষে, সেমস-গ্লোবাল ও জিআইজেড বাংলাদেশ উদ্ভাবন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কার্যকর নীতি-সংলাপের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি রূপান্তরকে আরও গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।