পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দিন দিন বেড়েই চলছে ডলফিনের মৃত্যু। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, গভীর সমুদ্রে অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা ও জেলেদের অস্বচ্ছলতা—সব মিলিয়ে ডলফিনের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ সংকট।
কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরেই বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উপকূলে ৭টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। এর আগে ২০২৪ সালে ১০টি এবং ২০২৩ সালে ১৫টি এবং ২০২২ সালে ২৫ টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়। ফলে প্রতিবছর মৃত ডলফিনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।
স্থানীয় পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কুয়াকাটার সভাপতি বাচ্চু বলেন, ডলফিন শুধু বাংলাদেশের সমুদ্র সীমার সৌন্দর্যের অংশ নয়, এটি সমুদ্রের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ডলফিন বাঁচানো মানেই উপকূল বাঁচানো।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক বখতিয়ার রহমান জানান, ডলফিন মৃত্যুর পেছনে অন্যতম কারণ হলো মাছ ধরার জালে আটকে পড়া, অপরিকল্পিত নৌযান চলাচল এবং সমুদ্রে শব্দদূষণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের খাদ্যাভাবও তীব্র হচ্ছে।
কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছর মৃত ডলফিনের সংখ্যা বাড়ছে। এ বিষয়ে সরকার, গবেষক ও স্থানীয়দের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে উপকূল থেকে একসময় ডলফিন হারিয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলফিন সুরক্ষা আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন ও জেলেদের সচেতন করা ছাড়া এ সংকট নিরসন সম্ভব নয়। এখনই পদক্ষেপ না নিলে কুয়াকাটার জীববৈচিত্র্যের এক বড় অংশ চিরতরে বিলীন হয়ে যেতে পারে।