জীবনের নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে আলোচনায় উঠে এসেছেন নবীনগরের সোহাতা গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী প্রমা রাণী কর্মকার। দারিদ্র্যের কঠিন বাঁধা পেরিয়ে ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই সাফল্য শুধু পরিবারের নয়, পুরো এলাকার গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রতিভাবান মেয়েটির স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু টিউশনি ও সেলাইয়ের কাজ করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালানো মেয়েটির পক্ষে উচ্চশিক্ষার খরচ বহন করা চরম কষ্টসাধ্য। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে তা ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনেকেই এগিয়ে আসেন তার পাশে দাঁড়াতে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে নবীনগরের কৃতি সন্তান, প্রবাসী ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক নজরুল ইসলাম নজু নিজ উদ্যোগে প্রমার পাশে দাঁড়ান। তার পাঠানো অর্থসহায়তা প্রমার পরিবারকে নিজ হাতে পৌঁছে দেন নবীনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি ও সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এমকে জসিম উদ্দিন।
এই সময় প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি বলেন, ‘প্রমার চোখের স্বপ্ন আর তার সংগ্রাম আমাদের নাড়া দিয়েছে। ওর মতো মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। আমি বিশ্বাস করি, সামান্য সহায়তাও কারও জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।’
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে প্রমার কলেজ ভর্তি ও বেতনমুক্ত পড়াশোনার আশ্বাস দিয়েছেন ‘ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ কলেজ’কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সলিমগঞ্জের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ভর্তি খরচ বহনের ঘোষণা দিয়েছে। আরও কিছু হৃদয়বান ব্যক্তি মোবাইল নম্বর নিয়ে সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
প্রমা রাণীর বাবা একজন নিম্নআয়ের মানুষ। যিনি দিনমজুরির মতো অস্থায়ী আয়ের উপর নির্ভরশীল। তার এমন প্রেক্ষাপটে মেয়েটির সাফল্য নিঃসন্দেহে সমাজের কাছে এক অনুপ্রেরণা।
সাংবাদিক এমকে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই, প্রমার মতো প্রতিভাবানরা যেন হারিয়ে না যায়। সমাজের সবাই যদি এক কদম এগিয়ে আসে, তাহলে এমন অনেক স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উঠবে।’