বাবার হত্যাকারীদের বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ১৪ বছরের আল-আমিন শেখ। একবছর আগে ঘাতকের নির্মম অত্যাচারে বাবা হারিয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডঙ্গা মুন্সিরচর গ্রামের এই কিশোর।
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার উপজেলার দাড়িয়ারকুল গ্রামে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলেও আজও মেলেনি ন্যায়বিচার। নিহত মো. আরমান শেখ ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক মো. তপু শেখের ছেলে।
গতবছরের ১১ মে হঠাৎ নিখোঁজ হন আরমান শেখ। পরদিন ১২ মে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার দাড়িয়ারকুল শ্মশানঘাট সংলগ্ন নদী থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ। তার মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া এবং শুরু হয় নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ।
আরমান শেখ ছিলেন পরিবারটির প্রধান উপার্জনকারী। তার পেছনে রয়ে গেছে মাত্র ১৪ মাস বয়সী এক পুত্রসন্তান, স্ত্রী, বাবা-মাসহ মোট ৬ সদস্যের একটি পরিবার। কিন্তু নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তার পরিবার বিচার পায়নি। বরং এখন চলছে দারিদ্র্য ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে মানবেতর জীবনযাপন।
বিচারহীনতার অভিযোগ করে আরমানের বাবা সাংবাদিক মো. তপু শেখ জানান, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন একা আমার পক্ষে পুরো পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা চরম অসহায়। স্থানীয় নেতাকর্মী কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ এখনো পাশে দাঁড়ায়নি খোঁজও নেয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমি বাংলাদেশ সরকারের এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি— আমার একমাত্র ছেলে মো. আরমান শেখের হত্যার সুষ্ঠু বিচার যেন দ্রুত হয়।
পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইন্সপেক্টর আশিষ মৈএ বলেন, মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের পরে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলাসহ গোপালগঞ্জের সব সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে একাধিকবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করলেও এ পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, সমাজের বিবেকবানদের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে— একজন সাংবাদিক পিতার পুত্রের হত্যাকাণ্ডে ও যদি বিচার না মেলে, তবে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী আছে।