ঝিনাইদহ সদরের ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের সাবেক ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় চার জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (০৭ জুলাই) ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহাবুব আলম এ রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- রাজবাড়ী জেলার নিমতলা এলাকার আমজাদ হোসেন, লিয়াকত হোসেন, দক্ষিণ দৌলতদিয়া গ্রামের আক্কাস আলী, ফরিদপুরের ভাটি লক্ষীপুর গ্রামের আলম শেখ।
এ ছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- ফরিদপুরের শোভারামপুর গ্রামের শাহীন, গোয়ালচামট গ্রামের মোহাম্মদ সাগর, টাপাখোলা গ্রামের নুরু খা ও যশোরের শেখহাটি খা পাড়া এলাকার মনির হোসেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে শুধু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমজাদ হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিল। বাকি সকল আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে জেলা শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় পতিত হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ দেখে আরোহীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ দেখতে পায় মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মিরাজুল ইসলামের। কিন্তু তখন মিরাজুলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ সময় পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই দিন সন্ধ্যায় মিরাজুল ইসলাম ইফতার করে প্রয়োজনীয় কাগজ, নিজের নামে ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি, ম্যাগজিনসহ অন্যান্য কাগজ নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে কর্মস্থল ডাকবাংলা পুলিশ ফাঁড়িতে রওয়ানা হয়েছেন।
এরপর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি শুরু করে। পরবর্তীতে পরদিন ২৪ তারিখ সকালে পুলিশ ভেটেরিনারি কলেজের পুর্ব পাশের পানি ভর্তি ডোবা থেকে মিরাজুল ইসলামের পোশাক পরিহিত অবস্থায় হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে ।
ওই দিনই পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাত নামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করে তার কাছে থাকা পিস্তল, গুলি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য মালামাল ছিনতাই এর জন্য সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করতে পারে।
এই মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে। সেই মামলায় তদন্ত শেষে সোমবার (০৭ জুলাই) বিচারক ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। মামলায় বাকি আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোক্তার হোসেন বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমজাদ হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।