দইয়ের রাজধানী খ্যাত বগুড়ায় রমজান এলেই ইফতারে সাদা দইয়ের (টক দই) কদর বেড়ে যায়। টক দইয়ের তৈরি মজাদার ঘোলসহ নানা পদের খাবার তৈরির করেন গৃহিণীরা। আর তাই রমজানে শহরের প্রতিটি দোকানে মিষ্টির বদলে টক বা সাদা দইয়ের পশরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলা শহর ও উপজেলার প্রায় দুই হাজার বেশি দোকানে বিক্রি হচ্ছে টক দই বা সাদা দই। এবছর রমজানের আগেই গরুর দুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় দইয়ের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে সবমিলিয়ে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার টক দই বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, গোহাইল রোড, স্টেশন সড়ক, কাঁঠালতলা, ফতেহ আলী বাজার, চেলোপাড়া, জলেশ্বরীতলা, বাদুরতলা, কালিতলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার দইয়ের দোকানগুলোতে এখন মিষ্টি দইয়ের তুলনায় সাদা দই বেশি দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বগুড়ায় সাদা দইয়ের হাঁড়ি বা আকার ভেদে শহরে দোকানগুলোতে ৮০ থেকে ২৫০ টাকা এবং ফুটপাতে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শহরের আকবরিয়া দই বিপনন শাখার ম্যানেজার ইমরান জানান, সারাবছর আকবরিয়ার দই বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের শাখা রয়েছে। মিষ্টি দই বিক্রি হয়। কিন্তু রমজানে সাদা দইয়ের চাহিদা বেশি। তাই মিষ্টি দইয়ের তুলনায় সাদা দইয়ের উৎপাদন বেশি করা হয়। এবছর আকবরিয়াতে টক দই বিক্রি হচ্ছে ছোট টি ৯০ ও বড়টি টি ১৮০ টাকা করে।
শহরের স্টেশন রোডের মহররম আলী দইয়ের ঘরের ফয়জুল ইসলাম সাকিব জানান, রমজানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী দই সরবরাহ করা হয়। আকার ভেদে ছোট হাড়ি ৮০ টাকা ও বড় হাড়ি ১৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
শহরের কাঁঠালতলা এলাকার ফুটপাতে দই বিক্রেতা গাবতলীর মিথুন ঘোষ, চেলোপাড়ার মৃগেন জানান, বাড়িতে দই তৈরি করে তা বগুড়া শহরে এনে বিক্রি করেন। প্রতিদিন গড়ে ১০০ পিসের মত বিক্রি হয়। ছোট হাড়ি ৬০ ও বড় হাড়ি ১২০ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন তারা।
শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, বগুড়া জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার সাদা দই বিক্রি হচ্ছে। যাতে করে মাসে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কোটির টাকার সাদা দই বেচাকেনা হবে। যা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি।
শহরের বিসিক এলাকার মিলটন সোনার জানান, ইফতারিতে সাদা দই অনেক উপকারি। সারা দিন পর রোজার ক্লান্তি দূর করতে সাদা দইয়ের ঘোল খুব উপকারি। আর পরিবারের সবার পছন্দের।
শহরের ফুলবাড়ি এলাকার শাহ গাজী, ছোট কুমিরা এলাকা আতিক হাসান সুমন জানান, দিনশেষে বাসায় সাদা দই নিয়ে ফিরি। বাসায় অন্য ইফতার তৈরি হয়। কিন্তু সাদা দই আমাদের তৃষ্ণা মিটাতে খুব কার্যকরী ও হজমে ভাল কাজ দেয়।