রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় একটি মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মো. সাজেদুল ইসলামকে (২৫) পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার সময় জনতার তীব্র রোষানলে পড়তে হয়।
গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইশোরকোল (আশ্রয়ণ) এলাকার আহমাদিয়া নূরুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিক্ষক সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে একাধিক শিশুশিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মাদরাসার ছাত্রী আকতারা (ছদ্মনাম, বয়স ৮) সহ আরও কয়েকজন শিশুশিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে কৌশলে ওই দিনেই অভিযুক্ত শিক্ষক বাড়ি চলে যান। পরে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) তিনি আবারও মাদরাসায় উপস্থিত হলে স্থানীয় লোকজন তাকে প্রথমে চর ইশোরকোল আশ্রয়ণ কেন্দ্র এলাকার মাদরাসাতেই অবরুদ্ধ ও আটক করে রাখে।
ঘটনাটি পরবর্তীতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে তারা হাজারো উত্তেজিত জনতার রোষানলে পড়েন। স্থানীয়রা দাবি জানাতে থাকে যে প্রকাশ্যে ধর্ষকের বিচার করতে হবে।
এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অভিযুক্তকে হেফাজতে নেন।
গঙ্গাচড়া মডেল থানা ওসি (তদন্ত) আবু হানিফ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।’
৬ ডিসেম্বর গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের মো. হোসেন আহমেদের ছেলে।
ওসি (তদন্ত) আরও জানান, শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে অভিযুক্ত সাজেদুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।