গত কয়েক বছর ধরে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ ছিলেন গাইবান্ধার পাট চাষিরা। তবে এবার জেলায় পাটের ভালো দাম পেয়ে উচ্ছ্বাস ফিরেছে কৃষকের মুখে। জেলার চরাঞ্চলে ব্যাপক পাটচাষ হলেও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় আগে ক্ষতির মুখে পড়তেন চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাম ধরে রাখা ও সরকারি পাটকেন্দ্রগুলো চালু হলে সোনালী আঁশের উৎপাদন আরও বাড়বে। সুদিন ফিরবে পাট চাষিদের।
গাইবান্ধার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, যতদূর চোখ যায় পাট পরিচর্যার শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত চাষিরা। তাদের এখন দম ফেলার সময় নেই। পাট কাটা, আশঁ ছাড়ানো, পচাঁনো ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত চাষি পরিবারের সবাই।
গত কয়েক বছর পাটের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন গাইবান্ধার পাট চাষিরা। তবে এবার যেন ফিরে এসেছে সেই সোনালী আঁশের সোনালী দিন। জেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ব্যাপক পাটের চাষ হয়েছে। বাজারে এবার মিলছে ভালো দাম।
কৃষকরা বলছেন, চর ও নিম্নাঞ্চলে যেখানে অন্য ফসল তেমন হয় না, সেখানে পাটের ব্যাপক ফলন হয়। যে কারণে এ অঞ্চলে প্রতি বছর ব্যাপক পাটের চাষ হয়। কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় হতাশ হন চাষিরা। গেল বছর প্রতি মন পাট ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এবার মৌসুমের শুরতেই চাষিরা দাম পাচ্ছেন ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এ রকম ভালো দাম থাকলে ও উন্নত জাতের বীজ সরবারহ করাসহ প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা বাড়ানো হলে জেলায় পাট চাষ দ্বিগুণ হবে।
ফুলছড়ি উপজেলার হাজীরহাট এলাকার পাট চাষি শাকিল মিয়া জানান, ধানের মতো কৃষি বিভাগ থেকে উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ করা হলে এবং সরকারি পাট ক্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হলে এ অঞ্চলের পাট চাষ দ্বিগুণ হবে।
সদর উপজেলার কামারজানির পাট চাষি গোলাম মিয়া জানান, প্রতি বছর পাটের দাম নিয়ে হতাশ থাকলেও এবার ভাল পেয়ে আবারো পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা।
গাইবান্ধা জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, পাটের উন্নত জাত আমদানিসহ সরকারি পাট ক্রয় কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু হলে এবং চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হলে আবারও বিশ্ববাজারে খ্যাতি ফিরিয়ে আনবে গাইবান্ধার সোনালী আঁশ পাট। পাট চাষ বাড়াতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এবার জেলায় ১৩ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। সোনালী আঁশ পাট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৬৫৯ মেট্রিকটন।