চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গুরুতর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরীকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের একাডেমিক পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে সিন্ডিকেট।
গত ১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর ১৩(৫) ধারা অনুযায়ী সিন্ডিকেট এ সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে বলা হয়েছে-সিন্ডিকেট কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা রাখে।
২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত চতুর্থ বর্ষের ৪১৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সামনে আসে। পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা প্রশ্নপত্র হুবহু মূল প্রশ্নের সঙ্গে মিলে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা স্থগিত করা হয় এবং গঠিত হয় চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি, যার আহ্বায়ক ছিলেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আল আমিন।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে আসে, পরীক্ষা কমিটির সভাপতির দায়িত্বহীনতা এবং প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে তার পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন না করাই মূলত এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দায়ী।
তদন্তকালীন সময়ে অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী বলেছিলেন, কম্পোজের জন্য গুগল ড্রাইভে রাখা প্রশ্ন বেহাত হয়ে ফাঁস হয়ে থাকতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরীকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের পরীক্ষাসংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সিন্ডিকেট সদস্যদের কেউ বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় অধ্যাপক আলী আজগর শিক্ষকদের মৌন মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ছাত্রদের দাবির বিরোধিতায় তার অবস্থান নিয়ে তখনও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্তে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় তা নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে।