অতিরিক্ত নগ্নতা, যৌন দৃশ্য এবং সামাজিক সংবেদনশীলতা লঙ্ঘন খোলামেলা দৃশ্য ভারতীয় সিনেমায় এ নতুন নয়। বেশি খোলামেলা দৃশ্য সেন্সর বোর্ডের চোখে অশ্লীলতা হিসেবে ধরা পড়ে।
দেখে নেওয়া যাক ভারতের কোন কোন সিনেমা চোখের অশ্লীলতার জন্য মুক্তি পায়নি।
আনফ্রিডম
সমকামিতা এবং ধর্মীয় মৌলবাদ নিয়ে তৈরি ‘আনফ্রিডম’ সিনেমা। সিনেমার একাংশে দুই নারীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য এবং অপর অংশে একজন মুসলিম চরমপন্থী জঙ্গি বন্দীর মানসিক দ্বন্দ্ব দেখানো হয়। বেশ কিছু সহিসংতার দৃশ্য এবং তুমুল নগ্নতা থাকায় এটি ভারতে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। রাজ অমর মিত্রা ২০১৫ সালে ছবিটি পরিচালনা করেন। এতে অভিনয় করেছেন প্রীতি গুপ্তা, আদিল হুসেন, ভবানী লি প্রমুখ।
দ্য পেইন্টেড হাউজ
একজন চিত্রশিল্পী ও তার কিশোরী মডেলের মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্ক এবং যৌন বিকারগ্রস্ততাকে ঘিরে মালয়ালম ভাষায় তৈরি ‘দ্য পেইন্টেড হাউজ’। এই ছবিতে থাকা নগ্নতা ও সাহসী দৃশ্যের কারণে চরম বিতর্কের জন্ম দেয়। ফলে সেন্সর বোর্ড ছবিটি ভারতে মুক্তি নিষিদ্ধ করে দেয়। ২০১৫ সালে স্যঞ্জীব সুরেন্দ্রনের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেন নেহা মহাজন, কালাধরন নাসির ও আকরাম মোহাম্মদ।
গান্ডু
বাংলা ভাষায় নির্মিত ‘গান্ডু’ ছবি। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন টলিউড অভিনেতা ঋ সেন, অনুব্রত বসু, কমলিকা ব্যানার্জি প্রমুখ। স্বাধীনধারার চলচ্চিত্রটিতে ছিল নগ্নতা, যৌনতার অভিনব মিশেল। খোলামেলা দৃশ্য, হস্তমৈথুন ও আপত্তিকর শব্দ ব্যবহারের কারণে ভারতের সেন্সর বোর্ড এটি মুক্তির অনুমতি দেয়নি। ২০১০ মুক্তির জন্য সেন্সর বোর্ড জমা পড়েছিল কৌশিক মুখার্জি পরিচালিত সিনেমাটি।
সিনস
একজন ক্যাথলিক পাদ্রির যৌন ইচ্ছা ও এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কের গল্প নিয়ে এগিয়েছে ‘সিনস’ ছবির দৃশ্যপট। এই ছবিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে খাটো করার অভিযোগে ভারত জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে। সিনেমার নগ্ন দৃশ্য, সাহসী সংলাপ ও ধর্মীয় উপস্থাপনের কারণে সেন্সর বোর্ডের বাঁধার মুখে পড়ে। ছবিটি ‘সংখ্যালঘু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে’ এই যুক্তিতেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ‘সিনস’ ২০০৫ সালে নির্মিত সিনেমা। এটি পরিচালক ভিনোদ পাধ্যায়। অভিনয় করেন শাইনি আহুজা ও সীমা রহমানি।
পাঁচ
পাঁচ বন্ধুর অপরাধজগতে প্রবেশ এবং তার পরিণতি নিয়ে ২০০৩ সালে অনুরাগ কাশ্যপ নির্মাণ করেন ‘পাঁচ’ সিনেমা। ছবিতে মাদক, সহিংসতা ও যৌনতা- সবই একসঙ্গে থাকায় সেন্সর বোর্ড বারবার বাধা দেয়। যদিও ছবিটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি, তবু মুক্তি পায়নি আজও। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন কেকে মেনন, অদিত্য শ্রীবাস্তব, তেজস্বিনী কোলহাপুরী প্রমুখ।
কামাসূত্র: দ্য টেল অব লাভ
ভাস্বতীর প্রাচীন যৌনগ্রন্থ ‘কামসূত্র’ অবলম্বনে ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয় ‘কামাসূত্র: দ্য টেল অব লাভ’। এই ঐতিহাসিক ছবিটি পরিচালনা করেন মীরা নায়ার। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন রেজিনা ক্যাসান্দ্রা ও ইন্দিরা ভার্মা। ছবির নগ্নতা ও যৌন দৃশ্য ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী মনে করে সেন্সর বোর্ড নিষিদ্ধ করে দেয়। তবে এই ছবিটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রেখা।
মালিক
এই চলচ্চিত্রে যৌনতা ছাড়াও ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনা ছিল। যৌনতার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কারণে তুমুল বিতর্ক তৈরি করে। ফলে সেন্সর বোর্ড সরাসরি মুক্তির অনুমতি দেয়নি। তবে দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে ছবিটি। বেশ কিছু ফিল্ম উৎসবেও হয়েছে প্রশংসিত। ‘মালিক’ ছবিটি ১৯৭২ সালে নির্মাণ করেন এস এম শাহিদ। এতে অভিনয় করেছেন রাজেশ খান্না ও শর্মিলা ঠাকুর।