যদিও এখনো বর্ষা পুরোপুরি আসেনি কিন্তু প্রকৃতির রূপ বদলাতে শুরু করেছে। আর এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই বেড়ে গেছে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ নানা রকমের সংক্রামক ব্যাধি। প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে এমন রোগীর ভিড় ক্রমশই বাড়ছে।
চিকিৎসকদের মতে, মৌসুমি সংক্রমণের এ সময়টাতে শুধু ওষুধ নয়, দরকার সচেতনতা- বিশেষ করে কী করবেন না, সেটা জানা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময়ে কিছু ভুল অভ্যাস আমাদের শরীরের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সংক্রমণ রোধে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধরে রাখতে কিছু বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী সেই বিষয়গুলো:
খোলা পানীয় বা রাস্তার খাবার নয়: গরম আর আর্দ্রতায় খাবার দ্রুত নষ্ট হয়। ফুটপাতের শরবত, ফুচকা যতই লোভনীয় হোক না কেন, অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকার জন্য এতে থাকে জীবাণু। এ সময় এই খাবার থেকে সহজেই হতে পারে ডায়রিয়া, টাইফয়েড কিংবা হেপাটাইটিস।
ভেজা কাপড়ে দীর্ঘক্ষণ না থাকা: বৃষ্টিতে ভিজে ঘরে ফিরে অনেকেই ভেজা জামাকাপড়েই থেকে যান। এর ফলে শরীরে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি ও জ্বর দেখা দিতে পারে। শিশুরা এতে বেশি সংবেদনশীল। তাই ভিজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাপড় বদলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ভুল চিকিৎসা থেকে বিরত থাকা: শরীর গরম হয়ে এলে বা মাথাব্যথা করলে আমরা অনেকেই নাপা বা অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নেই, যা রোগ নিরাময়ের বদলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
অপরিষ্কার পরিবেশে থাকা নয়: বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি মশার প্রজননের জন্য আদর্শ। তাই বাসা ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা জরুরি। মশা থেকে সৃষ্ট ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ যাতে না বাড়ে, সে জন্য এখন থেকেই সতর্ক হওয়া দরকার।
পানি কম খাওয়ার অভ্যাস: অনেকেই বর্ষাকালে তৃষ্ণা কম অনুভব করেন, ফলে পানি খাওয়ার পরিমাণও কমে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক ডায়রিয়া কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে-
পানিবাহিত এ রোগের জীবাণু পানি ছাড়াও পচা-বাসি খাবারের মাধ্যমেও ছড়িয়ে থাকে। জীবাণুটি যদি কোনোভাবে পচা-বাসি খাবারে পড়ে, তা সেখানে দ্রুত বংশবিস্তার করতে থাকে। যেমন : একটা থেকে চারটা, ৪টা থেকে ১৬টা; এভাবে ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে গরম খাবারে এই জীবাণু পড়লেও তেমন ছড়াতে পারে না।
এ ছাড়া ডায়রিয়ার জীবাণু আছে, এমন পানি দিয়ে তৈরি করা খাবার খেলেও ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
ডায়রিয়ার লক্ষণ
* একাধিকবার বমির সঙ্গে পানির মতো পাতলা পায়খানা হওয়া।
* মলের সঙ্গে রক্ত থাকতে পারে।
* জ্বর আসা, বিশেষ করে কাঁপুনি দিয়ে।
* প্রস্রাবের বেগ কমে যাওয়া।
* হজমশক্তি কমে যাওয়া, পেটব্যথা ও অস্বস্তি।
* খাবারে অনীহা, বমি বমি ভাব।