অ্যাসিডিটি দূর করার ঘরোয়া উপায়

অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি হলো সাধারণ হজম সংক্রান্ত সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন খাদ্যাভ্যাস, স্ট্রেস এবং জীবনযাপনের ধরনের কারণে এটি দেখা দিতে পারে। অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে আপনার সবসময় ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এটি অনেক অস্বস্তিকর হতে পারে। অ্যাসিডিটি দূর করতে কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে, যেগুলি আপনার উপকারে আসতে পারে। 

আসুন অ্যাসিডিটি, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং সম্পর্কিত অস্বস্তির জন্য কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। যেগুলো অ্যাসিডিটি এবং বুকজ্বালা থেকে মুক্তি দিবে। 

ঘরোয়া সমাধানগুলো জেনে নিন...

পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। তবে, অতিরিক্ত পানি একসাথে না খেয়ে ধীরে ধীরে পানি পান করুন।

দারুচিনি: এ মসলাটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে। এটি হজম প্রক্রিয়া ও শোষণক্রিয়া শক্তিশালী করে পাকস্থলীর সমস্যা দূর করবে। পাকস্থলীর নালীগুলোর ইনফেকশন থেকে মুক্তি পেতে দারুচিনির চা পান করুন।

কলা: কলা প্রাকৃতিকভাবে ক্ষারীয় এবং অতিরিক্ত অ্যাসিড নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে। এগুলি শ্লেষ্মা উৎপাদনকেও উদ্দীপিত করে, পাকস্থলীকে অ্যাসিডের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

ঘোল: বাটারমিল্ক ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা অ্যাসিডিটি নিরপেক্ষ করতে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি বিশেষ করে ঠান্ডা এবং পেটের জন্য সহজ।এটি গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটির জন্য ঘরোয়া প্রতিকারের সাথে এটি একটি দুর্দান্ত সংযোজন করে তোলে, যা হাইড্রেশন এবং আরাম প্রদান করে।

নারকেল পানি: নারকেল পানি শরীরের pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং পেটকে প্রশান্ত করে। এটি একটি প্রাকৃতিক হাইড্রেটর যা হজমে সহায়তা করে এবং অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস উভয় থেকে হালকা উপশমের জন্য এটি আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন।

জিরা: জিরা বীজ অ্যাসিড প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক এবং পাকস্থলীর ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। ভাজা জিরা গুঁড়া করে এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে অথবা এক কাপ সেদ্ধ পানিতে ১ চা চামচ জিরা বীজ মিশিয়ে প্রতিবেলা খাবারের পর পান করুন।

তুলসী পাতা: তুলসী পাতা থেঁতলে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুফল পাওয়া যায়। 

আজওয়াইন বীজ: জোয়ান, যাকে ক্যারাম বীজও বলা হয়, হজমে সহায়তা করে এবং পাচক এনজাইম বৃদ্ধি করে গ্যাস উপশম করতে সাহায্য করে। এই ক্ষুদ্র বীজগুলি অ্যাসিডিটি এবং বদহজম উভয়ের চিকিৎসার জন্য সুপরিচিত। অ্যাসিডিটি এবং পেট ফাঁপা রোগের ঘরোয়া প্রতিকার খুঁজছেন, যার দ্রুত ফলাফল পাওয়া যাবে, তখন এগুলি বিশেষভাবে সহায়ক।

বেকিং সোডা: বেকিং সোডা দ্রুত পাকস্থলীর অ্যাসিড নিরপেক্ষ করে কাজ করে এবং অ্যাসিডিটির জন্য তাৎক্ষণিক ঘরোয়া প্রতিকারের মধ্যে এটি একটি পছন্দসই বিকল্প হিসাবে বিবেচিত হয়। এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করুন। মাঝে মাঝে ব্যবহার করুন এবং উচ্চ সোডিয়াম উপাদানের কারণে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

আপেল সাইডার ভিনেগার: এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে দুই চা চামচ ভিনেগার মেশান। খালি পেটে পান করুন পেটে গ্যাস জমবে না।

আনারস: আনারস প্রাকৃতিক উপায়ে খাদ্য ভেঙে হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

ঠাণ্ডা দুধ: দুধে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে অ্যাসিড তৈরিতে বাধা দেয়। অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হলে একগ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করুন।

শিম বীজ: মৌরি বীজ সাধারণত গ্যাস এবং পেট ফাঁপা দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এর প্রশান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্য হজমে সহায়তা করে এবং খাবারের পরে অ্যাসিডিটি কমায়, যা গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির জন্য এটি একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া প্রতিকার। খাবারের পরে এক চা চামচ চিবিয়ে খান অথবা হালকা চা তৈরি করুন।

পরিমিত খাবার খেতে হবে, কম তেল ও মসলা দিয়ে রান্না করার অভ্যাস করুণ। আর দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা ঠিক নয়। কুমড়া, মুলা, পেঁয়াজ, মরিচ ও নারিকেল, গরুর মাংসসহ রিচ ফুড এড়িয়ে চললে আপনার অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।