প্রোটিন পাউডার দীর্ঘদিন খাওয়া কি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক?

প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট এখন ফিটনেসপ্রেমীদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। এটি পেশি গঠনে সহায়তা করে, তবে প্রতিদিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়া সবাইর জন্য নিরাপদ নয়। যাদের লিভার বা কিডনির সমস্যা আছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের ওপর চাপ ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত প্রোটিন পাউডার খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে সচেতনভাবে গ্রহণ করাই ভালো।

প্রোটিন শরীরের ইমিউন সিস্টেম, হরমোন, মাসল, এনজাইম ও অ্যাসিড-বেস ব্যালান্স রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয়ের দৈনিক প্রোটিন চাহিদা ওজন অনুযায়ী ০.৮-১.৬ গ্রাম/কেজি। যেমন, ৭০ কেজি ওজনের ব্যক্তির প্রয়োজন ৫৬-৭০ গ্রাম প্রোটিন প্রতিদিন।

যদি কেউ খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত প্রোটিন না পান, তাহলে পরিমাণমতো সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ নিরাপদ হতে পারে। তবে কিছু গুরুতর ঝুঁকি আছে:

* অনেক পাউডারে অতিরিক্ত চিনি থাকে (প্রতি স্কুপে ২০-২৩ গ্রাম পর্যন্ত), যা ওজন বাড়াতে পারে।

* কৃত্রিম সুইটেনার, ফ্লেভারিং, প্রিজারভেটিভ ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

* অনেক নিম্নমানের প্রোডাক্টে সীসা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, মারকারি এর মতো ভারী ধাতু, পেস্টিসাইড বা বিষাক্ত রাসায়নিক থাকতে পারে।

* যাদের কিডনি সমস্যা আছে (জানা বা অজানা), তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির ওপর চাপ ফেলতে পারে।

* ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলে ওয়েই বা কেসিন বেসড প্রোটিন হতে পারে হজমে সমস্যা; তবে প্ল্যান্ট-বেসড প্রোটিন এ সমস্যা কম।

ড. সন্দীপ সাতসাঙ্গি, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ব্যাঙ্গালোরের হেপাটোলজিস্ট জানান, প্রোটিন খাবার থেকেই গ্রহণ করাই উত্তম। যেমন: ডাল, বাদাম, পনির, দুধ, সয়া, ডিম, মাছ, মুরগি, টোফু ইত্যাদি।

কিন্তু যদি সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হয়, তাহলে নিজের প্রোটিন চাহিদা বুঝে, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে কি না দেখে এবং কোনও রোগ আছে কি না, তা যাচাই করে উপযুক্ত পাউডার বেছে নিতে হবে। 

৩০ বছর পর থেকে প্রতি দশকে ৩-৫% মাসল লস হয়, এটি রোধে উপযুক্ত প্রোটিন ও এক্সারসাইজ জরুরি। তাই, সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অন্ধভাবে স্কুপ নয়, হেলথি প্র্যাকটিসেই আসল নিরাপত্তা।