চশমার জন্য লেজার সার্জারি করা যাবে কি?

চশমার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় কন্ট্যাক্ট লেন্স। লেজার সার্জারি অথবা আরও আধুনিক পদ্ধতি লেন্স ইমপ্ল্যান্টেশন। সার্জারির মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রচলিত ল্যাসিক আর স্মাইল। এ ছাড়া লাসেক ও পিআরকে নামক অন্যান্য বিকল্প পদ্ধতিও রয়েছে।

লেজার সার্জারি কী

লেজার মূলত আলো। এই আলো ব্যবহার করে যেমন হীরা কিংবা শক্ত ধাতু কেটে ফেলা যায়, তেমনই চোখের কর্নিয়ার মতো সংবেদনশীল অঙ্গকে দেওয়া যায় নতুন আকৃতি। ল্যাসিক কিংবা স্মাইল সার্জারির জন্য ব্যবহার করা হয় এক্সাইমার লেজার।

লেজার পদ্ধতিতে কর্নিয়ার টিস্যুর আণবিক বন্ধন ভেঙে তা বাষ্পীভূত করা হয়। কর্নিয়া চোখের মোট পাওয়ারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং এটি এক ধরনের উত্তল লেন্স। এর আকৃতি ও পুরুত্ব অনুযায়ী চোখের অপটিক্যাল পাওয়ার পরিবর্তন করা যায়।

Eyes

এই ধারণাকে কাজে লাগিয়ে লেজার সার্জারির মাধ্যমে কর্নিয়ার পুরুত্ব পরিবর্তন করে চোখের মোট পাওয়ার পরিবর্তন করা হয়, যাতে আর চশমা ব্যবহার করতে না হয়।

লেজার সার্জারি কি সব ক্ষেত্রেই কার্যকর

উত্তর হলো, এটা নির্ভর করে পাওয়ারের ধরনের ওপর। বয়স চল্লিশের পর যে কাছের জিনিস কম দেখার সমস্যা তৈরি হয়, তার জন্য লেজার সার্জারি করা যায় না।

সবাই কি করাতে পারবেন

উত্তর হলো, না। কেননা লেজার সার্জারি করতে হলে প্রথমে চোখের পাওয়ার দুই বছর স্থিতিশীল থাকতে হয়। অর্থাৎ দুই বছরের মধ্যে কারও চোখের পাওয়ারে বড় পরিবর্তন হতে পারবে না। এরপর আছে কর্নিয়ার পুরুত্ব। কর্নিয়া বেশি পাতলা হলে সেখানে লেজার সার্জারি করা সম্ভব নয়। এরপর আছে বয়সের বিষয়টি।

১৮ বছরের ওপরে যেকোনো বয়সে করা যায়। আবার বয়স চল্লিশের কোঠায় চলে গেলে না করাই ভালো। কেননা তত দিনে প্রেসবায়োপিয়ার কারণে চশমার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

LASIK surgery

কাজেই চশমা একদমই যাঁরা ব্যবহার করতে চান না, তাঁদের জন্য ল্যাসিক প্রযোজ্য নয়। তবে কারও যদি অনেক ভারী চশমা ব্যবহার করতে হয়, তবে লেজার সার্জারির মাধ্যমে চশমার লেন্সের পুরুত্ব কমানো সম্ভব। সে ক্ষেত্রে লেজার সার্জারি ভালো বিকল্প হতে পারে। তবে সার্জারি করা যাবে কি  না, তা একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ রোগীর সব অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ল্যাসিক সার্জারি একসঙ্গে দুই চোখে করা যায়। চোখে ড্রপ দিয়ে অবশ করায় ব্যথা হয় না। এই পদ্ধতিতে দ্রুত সেরে ওঠা যায় ও স্বাভাবিক কাজে ফেরা সম্ভব। সেরে ওঠার পর খেলাধুলা ও সাঁতারও নিরাপদ। তবে চোখ শুষ্ক হওয়া-সহ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।

চশমার বিকল্প হিসেবে তাই ল্যাসিক ও স্মাইলের মতো লেজার সার্জারি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।