ডার্ক চকোলেট শুধু সুস্বাদু খাবার হিসেবেই নয়, বরং এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও নানা উপকার বয়ে আনতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। যারা সপ্তাহে অন্তত পাঁচবার ডার্ক চকোলেট খেয়ে থাকেন, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২১ শতাংশ কম।
কেন উপকারী ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটের মূল উপাদান হলো কোকো। কোকোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিশেষ করে পলিফেনলস ও ফ্ল্যাভোনয়েডস। এসব উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরের গ্লাইসেমিক রেসপন্স উন্নত করে, প্রদাহ কমায় এবং প্লেটলেট ফাংশন স্বাভাবিক রাখে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, কোকো পলিফেনলস অন্ত্রের প্রদাহ হ্রাস করতে পারে এবং শরীরের অন্যান্য প্রদাহজনিত সমস্যাও প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী
শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্কের জন্যও ডার্ক চকোলেট অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডার্ক চকোলেটের ফ্ল্যাভোনয়েডস মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং তাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমে। এমনকি Alzheimer’s ও Parkinson’s রোগ প্রতিরোধেও এর ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভূমিকা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডার্ক চকোলেট শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ফলে শরীর গ্লুকোজের সঙ্গে ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। সঠিক পরিমাণে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব।
কতটুকু খাওয়া নিরাপদ
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৬০ গ্রাম পর্যন্ত ডার্ক চকোলেট খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। তবে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-যে চকোলেট খাওয়া হবে তা যেন বিশুদ্ধ ডার্ক চকোলেট হয়, যাতে অতিরিক্ত চিনি বা কৃত্রিম উপাদান না থাকে। কারণ সাধারণ দুধ বা মিল্ক চকোলেটের মধ্যে চিনি অনেক বেশি থাকে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষজ্ঞের মতামত
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ ডা. পদ্মিনী বি.ভি. বলেন, ডার্ক চকোলেটের মধ্যে থাকা কোকো পলিফেনলস শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের জন্য। তবে এর সঠিক পরিমাণে গ্রহণই মূল বিষয়।
সতর্কতা
তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, ডার্ক চকোলেট কোনোভাবেই ডায়াবেটিসের চিকিৎসার বিকল্প নয়। এটি কেবল সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। সুস্থ থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি।