বয়স অনুযায়ী কেন স্বাস্থ্যপরীক্ষা আবশ্যক

আমরা অনেক সময়ই মনে করি, অসুস্থ না হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এটি একেবারেই ভুল ধারণা। কারণ, অনেক রোগ শরীরে নীরবে বাসা বাঁধে-যার উপসর্গ শুরু হয় অনেক পরে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে এসব রোগ প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত করা সম্ভব হয় এবং জটিলতা বাড়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুধুমাত্র অসুস্থতার জন্য নয়, বরং এটি সুস্থ জীবনধারার অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া উচিত।

কতদিন পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত

Health Check Up১

৪৫ বছরের কম বয়সে (যদি সুস্থ থাকেন): প্রতি ১-৩ বছরে একবার সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা যথেষ্ট।

৪৫ বছরের বেশি বয়সে: বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি।

যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত (যেমন: ডায়াবেটিস, সিওপিডি): বয়স নির্বিশেষে নিয়মিত ও ঘন ঘন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপকারিতা

  • রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও দ্রুত চিকিৎসা শুরু
  • বিদ্যমান রোগের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ
  • টিকা ও স্ক্রিনিং হালনাগাদ রাখা
  • চিকিৎসা ব্যয়ের ঝুঁকি হ্রাস
  • স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে সহায়তা

Health Check Up২

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সাধারণত যা অন্তর্ভুক্ত থাকে

  • ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বাস্থ্য ইতিহাস পর্যালোচনা
  • ওজন, রক্তচাপ, ধূমপান ও অ্যালকোহল অভ্যাস যাচাই
  • মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়ন (যেমন: বিষণ্নতা পরীক্ষা)
  • বয়স ও ঝুঁকিনির্ভর স্ক্রিনিং টেস্ট

নারীদের জন্য বাড়তি কিছু স্ক্রিনিং পরীক্ষা

* গর্ভধারণ-সক্ষম নারীদের জন্য গৃহ-সহিংসতা যাচাই

* ৫০–৭৪ বছর বয়সে স্তন ক্যানসারের ম্যামোগ্রাম

* ২১–৬৫ বছর বয়সে সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের প্যাপ স্মিয়ার

* ৪৫ বছর বয়স থেকে কোলেস্টেরল পরীক্ষা

* ৬৫ বছর থেকে অস্টিওপোরোসিস স্ক্রিনিং

পুরুষদের জন্য অতিরিক্ত পরীক্ষা

  • ৬৫-৭৫ বছর বয়সে পেটের ধমনি ফোলার স্ক্রিনিং (যদি ধূমপানের ইতিহাস থাকে)
  • ৫০ বছর বয়স থেকে প্রয়োজনে প্রস্টেট পরীক্ষা
  • ৩৫ বছর থেকে কোলেস্টেরল পরীক্ষা

Health Check Up৩

চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি

  • আগের রিপোর্ট ও ওষুধের তালিকা সঙ্গে নিন
  • টিকার ইতিহাস সংরক্ষণ করুন
  • নতুন উপসর্গ থাকলে লিখে নিন
  • বিশেষ সহায়তা লাগলে (যেমন হুইলচেয়ার বা দোভাষী) আগে থেকেই জানান

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি হলো সচেতনতা ও আগাম প্রস্তুতি। বয়স অনুযায়ী এবং ঝুঁকিভিত্তিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ভবিষ্যতের বড় বিপদ এড়াতে সহায়ক হতে পারে। সূত্র: হেলথলাইন