এডিস মশার প্রকোপ কমছে না। চলতি মাসেই একদিনে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন রেকর্ড ১২ জন। নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের জন্য এডিস থেকে বাঁচার সহজ হাতিয়ার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহার করা হচ্ছে মশার কয়েল। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কয়েল কিছু ক্ষেত্রে মশা দূর করতে সাহায্য করলেও এর ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
শহরের অলিগলির দোকানগুলোতে সহজেই পাওয়া যায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশার কয়েল। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় সাধারণ মানুষ নিয়মিত এগুলো ব্যবহার করেন। কেউ ২৪ ঘণ্টার, কেউ বা ৭২ ঘণ্টার কার্যকারিতা দাবি করা কয়েল কিনে ঘরে জ্বালান। ফলে ঘর ধোঁয়ায় ভরে উঠছে।
তবে রাতে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমানো মানেই ডেঙ্গুর ভয়াল থাবা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকা নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, কয়েল শতভাগ মশা দূর করতে পারে না, বরং এর ব্যবহারে শ্বাসকষ্ট, মাথা ব্যথা, ফুসফুসের ক্ষতি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রাজধানীর ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের মধ্যেও দেখা গেছে, অনেকেই নিয়মিত কয়েল ব্যবহার করলেও ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাননি। বরং ধোঁয়ার কারণে শারীরিক সমস্যা বেড়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার কয়েল মানবস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডা. লেলিন চৌধুরী জানান, মশা তাড়াতে যে কয়েল বা অ্যারোসল ব্যবহার করা হচ্ছে, তা কখনও কখনও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের ক্যান্সার, অ্যাজমা, হাঁপানি, অ্যালার্জি এমনকি ফুসকুড়িও দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মানুষকে মশার কয়েল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। পাশাপাশি এই পণ্যগুলোর উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণে কড়া নজরদারি প্রয়োজন।