৩ মিনিটে হাড় জোড়া লাগাবে যে আঠা

চীনের গবেষকরা এমন একটি চিকিৎসা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা ব্যবহার করে মাত্র ১৮০ সেকেন্ড বা ৩ মিনিটে ভাঙা হাড় জোড়া লাগানো সম্ভব। এই প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে ‘বোন গ্লু’ বা হাড়ের আঠা, যা শরীরে প্রাকৃতিকভাবে শোষিত হয়ে যায়। ফলে ধাতব ইমপ্ল্যান্টের মতো দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না।

বোন-০২ (Bone-02) নামে এই নতুন হাড়ের আঠা আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশে উন্মোচন করা হয়। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন স্যার রান রান শো হাসপাতালে কর্মরত অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী প্রধান সার্জন লিন শিয়েনফেং।

লিন শিয়েনফেং জানিয়েছেন, সেতুর নিচে ঝিনুক কীভাবে শক্তভাবে আটকে থাকে, সেই ধারণা থেকেই এই আঠা তৈরি হয়েছে। এর ফলে রক্তময় পরিবেশে মাত্র দুই থেকে তিন মিনিটেই হাড় দৃঢ়ভাবে জোড়া লাগানো সম্ভব।

গবেষকরা দাবি করেছেন, পরীক্ষাগারে বোন-০২ সফলভাবে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার সব মান পূরণ করেছে। যেখানে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে ইস্পাত পাত ও স্ক্রু ব্যবহার করে হাড় জোড়া লাগাতে হয়, সেখানে বোন গ্লু ব্যবহার করে পুরো প্রক্রিয়া মাত্র ১৮০ সেকেন্ডে শেষ করা সম্ভব।

চীনের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ১৫০ জনের বেশি রোগীর ওপর এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে। আঠাটি সর্বোচ্চ ৪০০ পাউন্ড চাপ সহ্য করতে সক্ষম। পাশ থেকে চাপ পড়লেও প্রায় ৫ লাখ প্যাসকাল পর্যন্ত এবং ওপর থেকে চাপ দিলে ১ কোটি প্যাসকাল পর্যন্ত এটি ভাঙে না।

বোন গ্লু ধাতব ইমপ্ল্যান্টের বিকল্প হিসেবে বিবেচনার সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি সংক্রমণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে বাজারে থাকা বোন সিমেন্ট বা বোন ভয়েড ফিলারগুলো কোনো আঠালো বৈশিষ্ট্য দাবি করে না। ১৯৪০ এর দশকে হাড়ের আঠা তৈরি হলেও সেগুলো জেলাটিন, ইপোক্সি রেজিন ও অ্যাক্রিলেটভিত্তিক হওয়ায় মানুষের দেহের ভেতর ব্যবহারযোগ্য ছিল না। নতুন বোন গ্লু এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দ্রুত ও নিরাপদ চিকিৎসা সম্ভাবনা তৈরি করেছে।