ক্লান্ত পাখিটিও দিন শেষে নীড়ে ফিরে বিশ্রাম নেয়। কর্মব্যস্ত মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। সারাদিন কাজের পর নিজ বাড়িতে ফিরে আসতে হয় তাকেও। আপনার বাড়িই আপনার বিশ্রামের জায়গা। শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলার স্থান। এ কারণে নিজের আশপাশটা এলোমেলো, অগোছালো থাকলে স্বভাবতই তা বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সুস্থতা এবং মানসিক প্রশান্তি- এ দুটোর সঙ্গে আপনার পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। কীভাবে নিজ গৃহকোণকে প্রশান্তির উৎস করে তুলবেন, জেনে নিন তার কিছু কৌশল।
ঘরবাড়ি সবসময় পরিষ্কার রাখুন: যত ব্যস্তই থাকুন না কেন- চেষ্টা করুন নিজের বাড়ি বা থাকার জায়গাটা সবসময় পরিষ্কার রাখতে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি, যারা অপ্রয়োজনীয় এবং অনেক পুরোনো আসবাবপত্র, বাড়িতে ঠাসাঠাসি করে রেখে দেই। দীর্ঘদিন সে সব আসবাবপত্র পরিষ্কার না করার ফলে ধুলো-বালি জমে নোংরা হয়ে থাকে। এতে হয় কী, আপনার অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে সর্দি, কাশি, এমনকি হাঁপানিজনিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রতিদিন সময় না পেলেও সপ্তাহে অন্তত একবার বা দুইবার ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। তাছাড়া পুরোনো আসবাবপত্রে সমস্যা থাকলে মেরামত করিয়ে নিন। অপ্রয়োজনীয় বা বাড়তি কাজে লাগে না এমন জিনিস বিক্রি করে দিতে পারেন।
শোবার ঘর থেকে ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট দূরে রাখুন: আপনার শোবার ঘর থেকে ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটগুলো যথাসাধ্য দূরে রাখুন। টিভি বিনোদনের মাধ্যম হলেও, তা শোবার ঘর নয়, অন্য ঘরে রাখুন। সঙ্গে কম্পিউটারও।
ঘরে সামঞ্জস্যপূর্ণ আলো বজায় রাখুন: শোবার ঘরটাকে প্রশান্তিময় করতে আলোর ব্যবহারে মনোযোগ দিন। চোখ জ্বালাপোড়া করে এমন আলো শোবার ঘরে লাগাবেন না। বরং ঘরের কোনায় ঝোলানো আলো, নানা উচ্চতার ল্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন। দেয়ালে খুব গাঢ় রং না লাগিয়ে সাদা, অফ হোয়াইট, ধূসর রঙ রাখার চেষ্টা করুন।
বাড়ির পরিবেশে কিছু পরিবর্তন করুন: অবসর সময়ে আরাম করার জন্য একটি দোলনা রাখুন। সন্ধ্যায় চা-নাস্তা খাওয়ার জন্য বারান্দায় বসার ব্যবস্থা করতে পারেন। চোখ জুড়িয়ে যাবে- এমন পেইন্টিং দেয়ালে রাখুন। হতে পারে তা আপনার আঁকা বা নিজের তোলা কিছু ছবি। সৌন্দর্য্য বাড়াতে ঘরের আসবাবপত্র এদিক-ওদিক করে রাখতে পারেন।
ঘরে সুগন্ধিযুক্ত এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করুন: শোবার ঘরে নিয়মিত সুগন্ধিযুক্ত এয়ারফ্রেশনার, সুগন্ধিযুক্ত মোমবাতি বা সুগন্ধিযুক্ত এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করুন। এটি আমাদের মানসিক উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী, জীবাণু নিরাময় করে এমন এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করুন।
ইনডোর প্ল্যান্ট বা সবুজ গাছপালা রোপণ করুন: মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য বাড়িতে কিছু গাছপালা রোপণ করুন। বাড়িতে অতিরিক্ত জায়গা না থাকলে ছোট ছোট টবে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখুন। এটি আপনার ঘরের বাতাসকে দূষণমুক্ত রাখে। সবসময় ঘরে জানালা লাগিয়ে রাখবেন না। জানালা খুলে মাঝে মাঝে পর্দাগুলো সরিয়ে দিন। এতে সূর্যের আলো খুব সহজেই ঘরে প্রবেশ করবে। ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ হলে, তা দূর হবে।