আমাদের দৈনন্দিন জীবনধারা অনেকাংশেই সুস্থতা নির্ধারণ করে। আমরা যা খাই, যেভাবে ঘুমাই বা যে অভ্যাসগুলো অনুসরণ করি—এসবের সরাসরি প্রভাব পড়ে শরীরের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ওপর। এর মধ্যে অন্যতম হলো লিভার। অনেক সময় অজান্তেই এমন কিছু ভুল অভ্যাস করি, যা লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
চলুন জেনে নিই এমন কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস সম্পর্কে-
অতিরিক্ত মদ্যপান
অনেকে মনে করেন অল্প অ্যালকোহল ক্ষতিকর নয়, কিন্তু নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে ফ্যাটি লিভার, প্রদাহসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
বেশি ওষুধ সেবন
প্রয়োজন ছাড়া ব্যথানাশক বা নানা ধরনের ওষুধ সেবন লিভারের ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ লিভার ফেলিওরের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধূমপান
সিগারেটের ক্ষতি শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ নয়; এতে থাকা রাসায়নিক পদার্থ লিভারের কোষও নষ্ট করে, এমনকি ফাইব্রোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলা ও কৃত্রিম মিষ্টি লিভারের জন্য ক্ষতিকর। এর পরিবর্তে ফল ও শাকসবজি বেশি করে খাওয়া উচিত, যা লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়, যা লিভারের ক্ষতি করে। নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম লিভারের সুরক্ষায় অপরিহার্য।
সকালে খালি পেটে থাকা
ঘুম থেকে উঠে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে লিভারের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং এর কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
টিকা না নেওয়া
হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে টিকা নেওয়া জরুরি। তবে টিকা নেওয়ার পর শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে বাড়তি ডোজ নিতে হতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট সেবন
ভাববেন না বেশি ভিটামিন মানেই বেশি উপকার। বিশেষ করে ভিটামিন এ-এর অতিরিক্ত গ্রহণ লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
রাত জাগা ও দেরি করে ওঠা
রাতে দেরিতে ঘুমানো ও সকালে দেরিতে ওঠার অভ্যাস হজমের পাশাপাশি লিভারের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া দমন করা
সকালে মল-মূত্র চেপে রাখা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে এবং দীর্ঘমেয়াদে লিভারকে দুর্বল করে।
শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
ব্যায়াম না করলে শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা লিভারের জন্য ক্ষতিকর। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম বা খেলাধুলা লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
সূত্র: বোল্ড স্কাই