সূর্যগ্রহণে ভয় নয়, চোখের সুরক্ষাই আসল সতর্কতা

সূর্যগ্রহণকে ঘিরে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। যুগে যুগে এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা বিশ্বাস ও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট ঘাঁটলেই সূর্যগ্রহণ সম্পর্কিত অসংখ্য তথ্য চোখে পড়ে, তবে কোনটি সত্য আর কোনটি ভ্রান্ত, অনেক সময় তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।

বলা হয়ে থাকে, সূর্যগ্রহণ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কেউ বলেন, এটি ফুড পয়জনিং, বদ হজম, এমনকি গর্ভপাত বা জেনেটিক ত্রুটির কারণ হতে পারে। কিন্তু এসবের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বিশেষজ্ঞরা একবাক্যে বলছেন- সূর্যগ্রহণ কেবল চোখের জন্য ক্ষতিকর, শরীরের অন্য কোনো অংশের ওপর এর প্রভাব নেই।

Lifestyle

খাবার ও সূর্যগ্রহণ
অনেক পরিবারে সূর্যগ্রহণের সময় খাবার খাওয়া বন্ধ রাখা হয়। তাদের বিশ্বাস, সূর্যের আলো শক্তির অন্যতম উৎস, তাই গ্রহণের সময় আলো না থাকলে হজমসহ বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনো ভিত্তি নেই। সূর্যগ্রহণের সময় খাবার খেলে শরীরের ক্ষতি হয় এমন প্রমাণ কখনো পাওয়া যায়নি।

গর্ভবতী নারীদের জন্য সতর্কতা
অন্য একটি প্রচলিত বিশ্বাস হলো- সূর্যগ্রহণের প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর ওপর পড়ে এবং জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ায়। বাস্তবে এরও বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। তবে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করা সবার জন্যই জরুরি। তাই প্রয়োজনে বাইরে বের হলে গর্ভবতী নারীদের চোখের সুরক্ষা নিশ্চিত করা উচিত।

শিশুদের জন্য বিশেষ সতর্কতা
শিশুরা কৌতূহলবশত খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানোর চেষ্টা করে। এই অভ্যাস বিপজ্জনক, কারণ সূর্যের রশ্মি সরাসরি চোখের রেটিনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। নাসা সতর্ক করেছে, মাত্র কয়েক সেকেন্ড খালি চোখে তাকালেও স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- রেটিনা ব্যথা অনুভব করে না, তাই ক্ষতি হওয়ার পরও তা সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না।

Lifestyle

বৈজ্ঞানিক সত্য
সব গুজব ও ভ্রান্ত ধারণা দূরে সরিয়ে বলতে হয়- সূর্যগ্রহণ শুধুই আমাদের চোখের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্য কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে না। তাই সূর্যগ্রহণ দেখতে চাইলে অবশ্যই বিশেষ নিরাপদ চশমা বা গ্রহণ দেখার জন্য অনুমোদিত যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে।

এক কথায়, সূর্যগ্রহণ প্রকৃতির বিস্ময়কর ঘটনা, ভয় নয়। শুধু চোখের সুরক্ষা নিশ্চিত করলেই আমরা নিরাপদে এই মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারি।