আপনি কি নিয়মিত বাজার করেন? ইদানিং মনে হচ্ছে, যা কিনছেন দুদিনও চলছে না? খাবার-দাবার বাবদ যে বাজেট আপনি করেন তা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না? তাহলে মনে হয় আপনার হিসেব নিকেষে গরমিল হচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে চাপটা গিয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপরে। অনেকক্ষেত্রে খরচ কমিয়ে আনলেও খাবার-দাবারে খরচ কিভাবে কমাবেন এটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। কীভাবে গ্রসারি কেনাকাটায় খরচ কমাবেন চলুন জেনে নেই কিছু টিপস…
* ভরা পেটে কেনাকাটা করুন। পেট ভরা থাকলে স্বাভাবিকভাবেই আপনি স্ন্যাকস অথবা ওই জাতীয় পণ্য কেনার বিষয়ে আগ্রহী হবেন না।
* যখনই কেনাকাটা করতে যাবেন সঙ্গে একটি তালিকা তৈরি করে নিয়ে যান। মনস্থির করুন যে, এর বাইরে আপনি কিছুই কিনবেন না।
* কেনাকাটা করার আগে সামনের সপ্তাহের জন্য আপনার বাড়ির খাবারের পরিকল্পনা করুন। খাবারগুলো তৈরি করতে যা লাগবে শুধু তাই কিনুন।
* সপ্তাহে মাত্র একবার কেনাকাটা করুন। আপনি যদি প্রতিদিন বা সপ্তাহে বেশ কয়েকবার ‘বাইরে বেরিয়েছি একটু দোকানে ঢুঁ মেরে যাই’, এটা ভাবেন তাহলে আপনার বেশি ব্যয় করার প্রবণতা থেকেই যাবে।
* কখনও ক্লান্ত শরীরে বাজার করতে যাবেন না। এত ফোকাস করা যায় না। সামনে যা পড়ে মনে হয় সেটাই তুলে নেই।
* আপনি যখন তাড়াহুড়োয় থাকেন করেন তখন পরিচিত দোকানে কেনাকাটা করুন। এতে আপনি আপনার যা প্রয়োজন তা সহজে খুঁজে পাবেন এবং আপনার যা প্রয়োজন তা দ্রুত নিয়ে নিতে পারবেন।
* আপনার বাজেটের বাইরে যাবেন না, এ বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকুন।
* খাবারের পরিকল্পনা এমনভাবে করুন যেন, প্রতিবেলার রান্না খাবার যেন সে বেলাতেই শেষ হয়ে যায়। বেশিরভাগ সময় দেখা বাড়তি খাবার ফ্রিজে রাখলে পরে সেটা আর কেউ খেতে চায় না। একসময় সেটা ফেলে দেওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না।
* প্যাকেটজাত জুস বা স্ন্যাকস পণ্য না কিনে এগুলো বাড়িতে তৈরি করুন। দেখবেন অনেকটা খরচ কম হচ্ছে।
* কোনো খাদ্যদ্রব্য ডিপ ফ্রিজে রাখার জন্য বা খাবার ঢেকে রাখার জন্য জিপ লক ব্যাগ বা ফয়েল পেপার লাগবেই এমন নয়। মা-খালারা যেভাবে পুরোন আটা, চিনির প্যাকেট ধুয়ে তা দিয়েই কাজ চালাতেন সেগুলো অনুসরণ করুন। এত অযথা খরচ কমবে।
* মাসে একবার আপনার ফ্রিজ এবং কেবিনেট পরিষ্কার করুন। বাজার করতে যাবার আগে এটা অবশ্যই করবেন। এতে যা কেনা আছে তা ব্যবহার করে ফেলা যায়।
* আপনার খাবারের স্টোরেজ থাকে যে কেবিনেটে এবং ড্রয়ারে সেগুলো গুছিয়ে তালিকাবদ্ধ করে রাখুন। আপনি যদি না জানেন যে আপনার কাছে কী আছে বা আপনি যা কিনেছেন তা খুঁজে না পান, তাহলে আপনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে একই জিনিস আবার কিনে ফেলবেন।
* যে সব পণ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থাকে তা কেনার আগে এবং ব্যবহারে আগে খেয়াল করুন। কারণ অযথা কিনে ফেলে রাখলেন আর ব্যবহার করা হলো না মানে হচ্ছে জিনিসটা ফেলে দিতে হবে। এই অপচয় বন্ধ করুন শপিংয়ের বিল কমে যাবে।
* কিছু পণ্য আছে যেগুলো একসঙ্গে বেশি করে কিনলে সাশ্রয় হয়। যেমন মাছ, মুরগি, তেল-মসলা, চাল, গুঁড়ো দুধ, চিনি, লবণ ইত্যাদি। মাস বা দিন পনেরর জন্য যদি এসব পণ্য আপনার সংগ্রহে থাকে তাহলে বাজারে যাওযার প্রয়োজন পড়বে না। স্বাভাবিকভাবে খরচও কম হবে।
* ছোট শিশুদের নিয়ে শপিংয়ে না যাওয়াই ভালো। কারণ শিশুরা অহেতুক বায়না করে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাধ্য করে। তবে বাড়ি থেকে যদি তাদের বুঝিয়ে নিয়ে যেতে পারেন যে তাদের কাজ হলো আপনার তালিকা অনুযায়ি পণ্য খুঁজে বের করা, তাহলে তারা খেলাচ্ছলেই সেটি করবে।
* নিয়মিত গ্রসারি শপিং করলে আপনি জানেন যে এই বাবদ আপনার কতো টাকা লাগে। ব্যাগে ঠিক সেই পরিমাণ টাকা সঙ্গে নিন। যেন বাড়তি কোন কিছুর দিকে নজর গেলেও কিনতে না পারেন।
* বাজারে যাওয়ার সময় সাধারণ একটি ফোন সঙ্গে নিন যেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা না থাকে। একইভাবে ক্রেডিট কার্ড খাকলে সেটিকেও বাড়িতে রেখে যান।
* গ্রসারি বা রান্নার সামগ্রী কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে যান। থরে থরে সাজানো পণ্যের, চকচকে সুপার শপে ঢুকলে নিজেকে সামলাবো কঠিন হবে। এতে বাজেট, তালিকা অনেকসময়ই ফেইল করতে পারে।
* খাবারের স্বাস্থ্যকর বিকল্প বের করুন এবং সে অনুযায়ি বাড়ির সদস্যদের খাদ্যাভাস গড়ে তুলুন। এতে খরচ অনেকটাই কমবে।