গরমে বাইরে থেকে ফিরেই গোসল, হতে পারে যেসব ক্ষতি

মাথার ওপর কাঠফাটা রোদ। বাসা থেকে বের হলেই অনুভূত হয় আগুনের উত্তাপ। সময়ে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরমের তীব্রতা। কেউ কেউ তো বাইরে থেকে ফিরেই তড়িঘড়ি করে ঢুকে পড়েন বাথরুমে—এক বালতি ঠান্ডা পানি ঢেলে দেন শরীরে। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাসটি আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে?

রোদে অনেকক্ষণ থাকার ফলে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। হঠাৎ ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের বাইরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়, কিন্তু ভেতরের তাপমাত্রা তখনও গরম থাকে। এই আকস্মিক তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফলে ‘থার্মাল শক’ বা শরীরিক শক লাগতে পারে, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে।

করণীয়: শরীরকে দিন স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময়- রোদ থেকে ফিরে সঙ্গে সঙ্গে গোসল না করে প্রথমে ঠান্ডা পরিবেশে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। ফ্যান বা এসির নিচে বসে শরীরের ঘাম শুকিয়ে নিন। এরপর ২০-৩০ মিনিট পর গোসল করুন। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রার মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকবে।

কেমন পানি ব্যবহার করবেন: অনেকে ঠান্ডা আরাম পেতে বরফজমা ফ্রিজের পানি দিয়ে গোসল করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি হজম সমস্যা, মাথাব্যথা, জ্বর এমনকি হাইপোথার্মিয়ার মতো সমস্যাও তৈরি করতে পারে। এর পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি বা হালকা গরম পানি ব্যবহার করাই শ্রেয়।

মাথায় সরাসরি পানি নয়, ধাপে ধাপে গোসল করুন: গরমে বাইরে থেকে এসে সরাসরি মাথায় ঠান্ডা পানি ঢাললে তা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এতে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা অজ্ঞান হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই প্রথমে পা, তারপর হাত, তারপর ধীরে ধীরে শরীরের ওপরের অংশে পানি দিন। একদম শেষে মাথায় পানি ঢালুন। এতে মস্তিষ্কের ওপর চাপ কম পড়ে এবং বিপদ এড়ানো যায়।

গোসলের বিকল্প সতেজতা: গরমে সতেজ থাকতে শুধু গোসলই নয়, পর্যাপ্ত পানি পান, হালকা ও শসা জাতীয় খাবার খাওয়া, খোলা জামাকাপড় পরা এবং রোদে বাইরে বের হলে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করাও জরুরি। শরীর যত সহজে ঠান্ডা থাকবে, ততই ক্লান্তি ও অসুস্থতা দূরে থাকবে। গরমে আরাম পেতে গা ভেজানো স্বস্তিদায়ক ঠিকই, তবে তা যেন বিপদ না ডেকে আনে। একটু সচেতনতা আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ ও সতেজ।