উপুড় হয়ে ঘুমানোতে স্বস্তি, কিন্তু বিপদও কম নয়

আপনার কি উপুড় হয়ে না শুলে ঘুমই আসে না? কিংবা বই পড়া বা লেখালেখির সময়ও কি পেটের উপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকার অভ্যাস আছে? এমন অনেকেই আছেন, যাদের কাছে এই ভঙ্গিটি সাময়িক আরামদায়ক মনে হলেও, চিকিৎসকরা বলছেন দীর্ঘমেয়াদে এটি হতে পারে মেরুদণ্ড, শ্বাসপ্রশ্বাস এবং ঘুমের গুণগতমানের জন্য ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উপুড় হয়ে ঘুমানোর ফলে শরীরের মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক রেখাচিত্র ব্যাহত হয়। এতে পিঠ ও ঘাড়ে ধীরে ধীরে ব্যথা তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি, এই ভঙ্গিতে শুয়ে থাকার সময় ফুসফুসের স্বাভাবিক সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে  যার প্রভাব পড়ে ঘুমের ওপরও।

ঘুমে বিঘ্ন, বাড়ে ঝুঁকি

চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের জটিলতা  যেমন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, মনঃসংযোগে সমস্যা, ত্বকের উজ্জ্বলতা হারানোসহ মানসিক অস্থিরতা।

আর এসব সমস্যার পেছনে অনেক সময় দায়ী হতে পারে আমাদের অবচেতন অভ্যাস  উপুড় হয়ে ঘুমানো।

চিকিৎসকদের পরামর্শ

বিভিন্ন গবেষণা ও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, ঘুমানোর সঠিক ভঙ্গি হলো চিত হয়ে বা পাশ ফিরে শোয়া। এতে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বাভাবিকভাবে বিশ্রামে থাকে, পিঠ ও ঘাড়ে চাপ পড়ে না এবং শ্বাস-প্রশ্বাসও হয় স্বাভাবিক।

তবে শুধু ঘুম নয়, যারা উপুড় হয়ে পড়ালেখা বা লেখালেখির কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রেও এই অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, চেয়ারে বসে সামনের দিকে হালকা ঝুঁকে কাজ করাই বেশি স্বাস্থ্যকর। সবসময় হেলান দিয়ে বসা শরীরের সঠিক ভঙ্গিকে ব্যাহত করে।

যা করবেন

  • উপুড় হয়ে ঘুমানো বা কাজ করার অভ্যাস ধীরে ধীরে বাদ দিন
  • চিত হয়ে বা পাশ ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন
  • সঠিক ভঙ্গিতে বসে কাজ করুন হেলান না দিয়ে সামান্য ঝুঁকে
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও সঠিক ঘুমের ভঙ্গির গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করুন

স্বাস্থ্যবান জীবন শুরু হয় সঠিক অভ্যাস থেকে। ঘুম যেমন বিশ্রামের জন্য অপরিহার্য, তেমনি ঘুমের ভঙ্গিটিও শরীরের সামগ্রিক সুস্থতায় বড় ভূমিকা রাখে। তাই উপুড় হয়ে শোয়ার আরাম নয়, চিত হয়ে শোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন সুস্থ থাকুন।