চিয়া সিড এখন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় এক সুপারফুড। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি হজমে সহায়তা করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। তবে সব খাবারের মতোই চিয়া সিডও সবার জন্য নয়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটি উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, যাদের নিচের স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের চিয়া সিড খাওয়ার আগে সতর্ক থাকা উচিত বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
নিম্ন রক্তচাপ থাকলে
চিয়া সিড রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু যাদের আগে থেকেই নিম্ন রক্তচাপ (হাইপোটেনশন) রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি রক্তচাপ আরও নিচে নামিয়ে দিতে পারে। এতে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বিপজ্জনক অবস্থাও তৈরি হতে পারে।
রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করলে
চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের রক্ত পাতলা করার গুণ রয়েছে। ফলে যারা ইতিমধ্যেই ওয়ারফারিন, অ্যাসপিরিন বা অন্যান্য রক্ত পাতলা করার ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। এতে শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যার ফলে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থাকলে
যাদের গ্যাস, পেট ফাঁপা বা আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম) এর মতো সমস্যা আছে, তাদের জন্য চিয়া সিড ক্ষতিকর হতে পারে। এতে দ্রবণীয় ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি পেটে পানি টেনে ফুলে ওঠে, ফলে অস্বস্তি, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনির সমস্যা থাকলে
চিয়া সিডে পটাশিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা অনেক বেশি। সাধারণত এই উপাদানগুলো শরীরের জন্য উপকারী হলেও, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এগুলো শরীরে জমে গিয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং হাইপারক্যালেমিয়া (রক্তে অতিরিক্ত পটাশিয়াম) হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিয়া সিড স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী হলেও, এটি খাওয়ার আগে নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। বিশেষ করে যাদের রক্তচাপ, কিডনি বা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
সঠিক পরিমাণে ও সঠিক উপায়ে চিয়া সিড গ্রহণ করলে এটি শরীরের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে। তবে অজান্তে অতিরিক্ত খেলে তা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে তাই সচেতনতা ও পরিমিতি বজায় রাখাই শ্রেয়।