ঈদুল আজহায় ঘরের কাজ বলতে গেলে একটু বেশিই থাকে। মাংস কাটাকুটি থেকে শুরু করে ভাগ করা এবং পরে তা সংরক্ষণের কাজটাও নিজ হাতেই করেন অধিকাংশ মানুষ। তবে দেখা যায়, অনেকটা সময় ধরে রক্ত-মাংস হাতে নিয়ে কাজ করার কারণে ত্বকে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের সুরক্ষায় ঈদের সময়টায় কী করবেন, আসুন জেনে নিই-
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘মাংস নাড়াচাড়া করতে গিয়ে ছোট হাড় দিয়ে যেকোন সময় আঘাত লাগতে পারে হাতে। তবে এ রকমের ছোটখাটো আঘাত প্রায় সময়ই অবহেলা করতে দেখা যায় অনেককেই। ছোট আঘাত থেকেই সৃষ্টি হতে পারে জটিলতা। আঘাত ছোট হলেও ওই স্থানে পরবর্তী সময়ে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আবার কারও কারও ত্বকে অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তা ছাড়া একজিমা কিংবা সোরিয়াসিস আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকের সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। রক্ত-মাংস নাড়াচাড়া করতে গিয়ে যে কারও নখও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’ ত্বক ও নখ সুস্থ রাখার উপায়ও জানালেন এই বিশেষজ্ঞ।
কাজের প্রস্তুতি
বড় নখ সহজে ভেঙে যেতে পারে। তাই নখ ছোট রাখুন।
গ্লাভস পরে কাজ করুন।
গ্লাভস পরে কাজ করলে হাতের ত্বক এবং নখ সুরক্ষিত থাকবে। চিকিৎসকেরা জীবাণুমুক্ত (স্টেরাইল) গ্লাভস ব্যবহার করেন; এ ধরনের গ্লাভস আপনি বেছে নিতে পারেন। এসব পাওয়া যায় ওষুধের দোকানেই। এসব গ্লাভস সাধারণ পিভিসি গ্লাভসের চেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয়। তবে এসব গ্লাভসে থাকা পাউডারে কারও কারও অ্যালার্জি থাকে (ল্যাটেক্স অ্যালার্জি)। তাঁরা ল্যাটেক্স ফ্রি বা পাউডার ফ্রি গ্লাভস বেছে নিতে পারেন।
হাত পরিষ্কার করুন এই পদ্ধতিতে
হাত পরিষ্কার করার জন্য অনেকেই লেবু ব্যবহার করেন। তবে ত্বকে সরাসরি লেবু প্রয়োগ করতে নেই; বরং হাত পরিষ্কার করুন এই নিয়মে—
একটি মাঝারি আকারের বাটিতে কুসুম গরম পানি নিন। তাতে এক কোয়া লেবুর রস এবং সামান্য লবণ মিশিয়ে নিন। এই পানিতে হাত ডুবিয়ে রাখুন এক-দুই মিনিটের জন্য। এরপর শ্যাম্পু-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু-পানির পরিবর্তে মৃদু ক্ষারের সাবান ও পানি ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে ধোয়া হলে হাত পরিষ্কার হয়ে যায় সহজে। আঠালো বা তেলতেলে ভাব থাকে না। দুর্গন্ধও হয় না। এ সময় হাত ধোয়ার জন্য সাধারণ সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার না করাই ভালো।
হাতের কাছে রাখুন ময়েশ্চারাইজার। হাত ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না। হাতের ত্বকের জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি (রঙিন নয়) ভালো। ঈদের দিন হাতের কাছেই রাখুন এই অনুষঙ্গটি। ঘুমের আগেও তা লাগিয়ে নেবেন হাতে।
আরও যা
কাজ সেরে গোসল করে নিন। কাজ করতে গিয়ে পোশাকেও রক্ত লেগে যেতে পারে। রক্ত লেগে যাওয়া পোশাক ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রাখুন অন্তত আড়াই ঘণ্টা। তাহলে জীবাণু সংক্রমণের ভয় থাকবে না। এসব কাপড় ওয়াশিং মেশিনে দেবেন না। হাতে ছোটখাটো আঘাত লাগলেও সেটির যত্ন নিন। আহত স্থান পরিষ্কার ও শুকনা রাখবেন।