বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী পালিত

বাংলা সাহিত্যের অগ্রদূত, কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’–এর লেখক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী রাজবাড়ীর পদমদীতে মীরের মাজার প্রঙ্গনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বাংলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রে এই জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় লেখকের সমাধিতে বাংলা অ্যাকাডেমি, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মীরের স্মৃতি সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে।

পরে স্মৃতি কেন্দ্র প্রাঙ্গণে মীর মশাররফ হোসেনের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার এবং প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা অ্যাকাডেমির সচিব (উপসচিব) ড. মো: সেলিম রেজা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, বাংলা অ্যাকাডেমির পরিচালক সমীর কুমার সরকার এবং ড. সরকার আমিন।

আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো: কামাল হোসেন খান, সহকারী অধ্যাপক মো: শাহজালাল, রাজবাড়ী মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি সালাম তাসির এবং বালিয়াকান্দি মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি মুন্সী আমীর আলী।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার লেখা ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাস শুধু সাহিত্য নয়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিফলনও বটে।

মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির পদমদী গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র।

স্মৃতি কেন্দ্রে রয়েছে লেখকের পরিবার-পরিজনের সমাধি, ভাস্কর্য, সংগ্রহশালা, সভাকক্ষ, গ্রন্থাগার ও পাঠাগার। তবে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় বর্তমানে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন তার জীবনে ৩৭টি গ্রন্থ রচনা করেন। উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে — রত্নাবতী, গৌরি সেতু, বসন্ত কুমারী, জমিদার দর্পণ, গো-জীবন, বেহুলা গীতাভিনয়, গাজী মিয়ার বস্তানী, মৌলুদ শরীফ, আমার জীবনী ও বিষাদ সিন্ধু।