চলতি বছরের মার্চে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে ২৯৮টি ভুল তথ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক বিষয়ে। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে শনাক্ত হয় যথাক্রমে ২৭১ ও ২৬৮টি ভুল তথ্য। খবর রিউমর স্ক্যানার’র।
মার্চে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিষয়ে ১০৫টি ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ৩৫ শতাংশ। এছাড়া জাতীয় বিষয়ে ১০৩টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১২টি, ধর্মীয় বিষয়ে ৩৬টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে তিনটি, শিক্ষা বিষয়ে তিনটি, প্রতারণা বিষয়ে ১২টি, খেলাধুলা বিষয়ে ১৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে।
এসব ঘটনায় ভিডিও কেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি, ১৪৩টি। এছাড়া তথ্য কেন্দ্রিক ভুল ছিল ১১০টি এবং ছবি কেন্দ্রিক ভুল ছিল ৪৫টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ১৬৮টি, বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৯৭টি এবং বিকৃত হিসেবে ৩১টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
প্লাটফর্ম হিসেবে গত মাসে ফেসবু্কে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সংখ্যার হিসেবে যা ২৭৩টি। এছাড়া এক্সে ৬২টি, টিকটকে সাতটি, ইউটিউবে ৪৪টি, ইন্সটাগ্রামে ২৬টি, থ্রেডসে অন্তত পাঁচটি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।
ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১৬টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে ১৫টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ২২টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে। উপদেষ্টাদের মধ্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে), ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে চারটি (সবগুলোই বিপক্ষে), ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে), মো. তৌহিদ হোসেনকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে) এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে) ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
এ সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে ৭টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) জড়িয়ে গত মাসে চারটি (৭৫ শতাংশই বিপক্ষে) ভুল তথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।
এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ছয়টি অপতথ্য (৮৩ শতাংশই পক্ষে) শনাক্ত করা হয়েছে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে এই সময়ে ৩৩টি ভুল তথ্য (৮৫ শতাংশই পক্ষে) প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে নতুন রাজনৈতিক দলটিকে জড়িয়ে গত মাসে দুইটি অপতথ্য (সবগুলোই বিপক্ষে) শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া দলটির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে ছয়টি (সবগুলোই বিপক্ষে), সারজিস আলমকে জড়িয়ে তিনটি (সবগুলোই বিপক্ষে), তাসনিম জারাকে জড়িয়ে চারটি (সবগুলোই বিপক্ষে), হুমায়রা নুরকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে), আব্দুল হান্নান মাসউদকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে) অপতথ্য প্রচার দেখা গেছে।
এছাড়া মার্চে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে সাতটিসহ এই বাহিনীকে জড়িয়ে ২৩টি ভুল তথ্য প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের বিষয়ে ছড়ানো তিনটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর বাইরে র্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে জড়িয়ে একটি করে ভুয়া তথ্যের প্রচার ছিল মার্চে।