উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হতে পারে লন্ডন ক্লিনিকে। এ জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স।
বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ছাড়ে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। লন্ডন পৌঁছানোর আগে প্রায় দীর্ঘ আট ঘণ্টার ভ্রমণে দোহায় যাত্রাবিরতি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম সাক্ষাৎ করে চেয়ারপারসনের শারীরিক খোঁজখবর নেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকায় খালেদা জিয়াকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে গুলশানসহ বিমানবন্দরের পথে রাস্তার দুপাশে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ জড়ো হন।
ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন-অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিক, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছোট পুত্রবধূ সৈয়দা শর্মিলা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভর্তি করা হবে। সেখানকার চিকিৎসকরাই তার পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেবেন।
‘লন্ডন ক্লিনিক’ প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালটিতে দ্রুত রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, ইউরোলজি, গাইনোকলজি ও ডার্মাটোলজিসহ আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে। এটি যুক্তরাজ্যের বড় বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। যার প্রতিষ্ঠা সন ১৯৩২। অবস্থান সেন্ট্রাল লন্ডনের ডেভনশায়ার প্লেস ও মেরিলিবন সড়কে। ইতোপূর্বে যুক্তরাজ্যের শাসকদের অনেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন বলে তথ্য রয়েছে।
চিকিৎসার জন্য সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। প্রায় তিন মাসের বেশি সময় পর ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি মুক্তি পান।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েকদফা তারিখ পরিবর্তন হলেও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী।
এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আইসিইউ সুবিধা ছাড়াও রয়েছে তাৎক্ষণিক জীবন রক্ষার সব ধরনের সুবিধা। লন্ডনে যাওয়ার আগে দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।