পর্দা উঠল বইমেলার, নজর কাড়ছে ‘জুলাই চত্বর’

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’-প্রতিপাদ্য নিয়ে অমর একুশে বইমেলার পর্দা উন্মোচন হল। কয়েক দশকের ধারাবাহিকতায় ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন এক মাসের জন্য শুরু হয়েছে বাংলা ও বাঙালির প্রাণের এ মেলা। সবচেয়ে বড় বইমেলা আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। এবার নজর কাড়ছে ‘জুলাই চত্বর’।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় মাসব্যাপী এ বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বইমেলায় অংশগ্রহণকারী ৭০৮ জন প্রকাশকের মধ্যে ৯৯টি স্টল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, ৬০৯টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছর বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

মেলার গেট ও অঙ্গ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে লাল-কালো আর সাদা রং, ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিপ্লব, শোক আর আশার প্রদীপ। আর গণআন্দোলনের স্মৃতি স্মরণে মেলায় রয়েছে ‘জুলাই চত্বর’।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

মেলায় ৩৭টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। একটি বাংলা একাডেমিতে এবং ৩৬টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। লিটল ম্যাগাজিন কর্নারটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে গাছের নীচে, তাতে প্রায় ১৩০টি লিটল ম্যাগাজিন স্টল আছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন জানান, এ বছরের বইমেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’।

এ সময় তিনি অমর একুশে বইমেলা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, মেট্রোরেল স্টেশনের কাছাকাছি হওয়ায় বহির্গমন গেটটি মন্দিরের গেটের কাছাকাছি সরানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট ও ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের কাছে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য চারটি পয়েন্ট রয়েছে।

ড. সরকার আমিন জানান, মেলার সীমানা বরাবর খাবারের স্টলের আয়োজন করা হয়েছে ও মেলা প্রাঙ্গণে ৩০টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে, যা মেলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে নিরাপত্তা। অনুষ্ঠানস্থলে তিন শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে এবং সব প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে স্থাপন করা হয়েছে আর্চওয়ে।

এবারও মেলার মূল মঞ্চ হয়েছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে; আর ‘বই খোলা’ এবং ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে। মূল মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় সেমিনার ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

প্রতি কর্মদিবসে সকলের জন্য বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকছে বইমেলা। দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকছে। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মেলা সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।