বাংলাদেশের যেসব জেলায় ঈদ রোববার

সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে আগামীকাল। বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে প্রায় দুশ বছর ধরে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও চন্দ্র মাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অনুশাসন পালন করে আসছেন তারা।

সব ঠিক থাকলে আগামীকাল রোববার (৩০ মার্চ) ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুই ঈদ উদযাপনের প্রচলন করেন। তার দেখাদেখি হাজীগঞ্জ ছাড়াও ফরিদগঞ্জ ও মতলব উত্তরের বেশ কিছু গ্রামসহ সবমিলিয়ে জেলার প্রায় অর্ধশত গ্রামে এভাবে রোজা ও ঈদ করা হয়।

ভোলা জেলার পাঁচ উপজেলার ১৪টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার পরিবার রোববার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। তাই সকাল ৯টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী গ্রামে মজনু মিয়ার নিজ বাড়ির আঙিনায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

শরীয়তপুরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই সুরেশ্বর দরবার শরীফে ৩০টি গ্রামের মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। সে হিসেবে রোববার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টায় ঈদুল ফিতর পালন উপলক্ষে সুরেশ্বর দরবার শরীফের ঈদগাহ মাঠে পৃথকভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের মির্জাখীল দরবার শরিফের খানকাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত হবে। হজরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (ক), হজরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (ক), হজরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (ক)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হজরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (ক)-এর তত্ত্বাবধানে উনারই জানশীন হজরত ইমামুল আরেফীন ড. মৌলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন।

ঈদ উদযাপনের বিষয়ে মির্জাখীল দরবার শরিফের মোহাম্মদ মছউদুর রহমান বলেন, আমরা হানাফি মাজহাবের অনুসারী হিসেবে আমাদের নিকটবর্তী সময়ের কম ব্যবধান এবং আমাদের পূর্বের দেশগুলোর চন্দ্র দর্শন বিবেচনায়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ দ্রাঘিমাংশ ও অক্ষাংশের হিসেবে চাঁদের অবস্থান এবং মক্কা ও মদিনা শরিফে তথা আরব বিশ্বের চাঁদ দেখার খবর বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জেনে আগামীকাল রোববার (৩০ মার্চ ) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

যেসব স্থানে রোববার ঈদ
মির্জাখীল দরবার শরিফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডেঙ্গা, আলীনগর, মাদার্শা, খাগরিয়া, মৈশামুড়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, চরতি, সুঁইপুরা, হালুয়াঘোনা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, চরবরমা, কেশুয়া, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, ডোংরা, শেখেরখীল, ছনুয়া, পুইছড়ি, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, খাসকামা, কাটাখালী, রায়পুর, গুজরা, লোহাগাড়ার পুঁটিবিলা, কলাউজান, চুনতী এবং সীতাকুণ্ডের মাহমুদাবাদ, বারিয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মুহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আব্দুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা, মিরশরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রামসহ চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর শতাধিক গ্রামের বহুসংখ্যক অনুসারী পবিত্র সওম পালন শেষে আগামীকাল রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।

এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার অনেক গ্রামে থাকা মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরাও আগামীকাল রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।