২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অপরিহার্য বলে জানিয়েছে করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত ‘এনডিসি ৩.০: ভবিষ্যৎ টার্গেট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সেশনটি পরিচালনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত দেশের সর্বাধিক কার্বন নিঃসরণকারী খাত। জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (UNFCCC) নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে আরও উচ্চাভিলাষী কার্বন হ্রাসের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর এনডিসি ৩.০ খসড়া প্রণয়ন করছে। ইতোমধ্যে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সিপিডির গবেষণায় বলা হয়, টেকসই বিদ্যুৎ খাত গড়ে তুলতে আগামী দুই দশকে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।
১৬,৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগবে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০৩৫ সালে ১২,৮৩২ মেগাওয়াট উৎপাদনে লাগবে ১৩ বিলিয়ন ডলার, আর ২০৪১ সালে ১১,১২৪ মেগাওয়াট উৎপাদনে লাগবে ১১ বিলিয়ন ডলার।
সব মিলিয়ে ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈশ্বিক ৩০টি জলবায়ু তহবিল থেকে সংগ্রহ সম্ভব বলে উল্লেখ করা হয়।
সভায় দুটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা সহকারী মেহেদী হাসান শামীন ও গবেষক হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি। গবেষণায় উঠে আসে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা কাজে লাগানো না গেলে জলবায়ু অভিযোজন ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে যাবে।
সিপিডি সতর্ক করে জানায়, ২০৩৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে দেশের বিদ্যুৎ খাত আরও বেশি কার্বন নির্ভর হয়ে পড়বে, যা আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রতিশ্রুতি পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই আন্তর্জাতিক তহবিল, দেশীয় বিনিয়োগ ও কার্যকর নীতির সমন্বয় ছাড়া জলবায়ু লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সাফিউল্লাহ, পরিবেশ উইং-এর অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান এবং বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান।