বদরুদ্দীন উমর ছিলেন প্রগতির বাতিঘর: প্রধান উপদেষ্টা

মুক্তিকামী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম অগ্রনায়ক, প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বদরুদ্দীন উমর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা এক শোকবার্তায় বলেন, বদরুদ্দীন উমর ছিলেন আমাদের মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতি-সংগ্রামের এক উজ্জ্বল বাতিঘর। ভাষা আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা, ঔপনিবেশিক মানসিকতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ এবং সমাজতান্ত্রিক দর্শনের প্রতি তাঁর অবিচল নিষ্ঠা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে।

শিক্ষাজীবনে বদরুদ্দীন উমর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে পেশা শুরু করেন এবং পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তবে তাঁর পরিচিতি শুধু শিক্ষকতায় সীমাবদ্ধ ছিল না তিনি ছিলেন একজন চিন্তানায়ক, যিনি স্বৈরাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করে গেছেন।

শোকবার্তায় মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনের পরিবর্তনে বদরুদ্দীন উমর গোড়া থেকেই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনকে তিনি উপমহাদেশের এক ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে বদরুদ্দীন উমর শুধু একজন তাত্ত্বিক নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মাঠে নামা একজন সংগঠক ও সংগ্রামী। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল, যা ছিল তাঁর জীবনের মূল্যায়নের একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি।’

বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে শোকবার্তায় বলা হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিন্তাশীল মানুষদের জন্য তাঁর লেখনী ও জীবনদর্শন এক অনন্য পথনির্দেশ হিসেবে কাজ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী, অনুসারী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।