খুলছে সেন্টমার্টিন, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা

৯ মাস পর আগামী ১ নভেম্বর থেকে আবার সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারবেন পর্যটকেরা। তবে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সরকার নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে ১২টি নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।

‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’ অনুযায়ী প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’-এর আলোকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনাগুলো হলো:

১. বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিন দ্বীপে চলাচল করতে পারবে না।
২. পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে হবে, যেখানে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট অবৈধ গণ্য হবে।
৩. দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটক সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

৪. নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ।
৫. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
৬. ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
৭. প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন।
৮. দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ।
৯. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
১০. সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইক বা যে কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
১১. পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, মিনিপ্যাক সাবান-শ্যাম্পু, ছোট প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি) নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
১২. প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকার আশা করছে, এই নতুন নির্দেশনাগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি হবে দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ বাস্তবায়ন বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উপস্থিত ছিলেন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ই-টিকিটিং বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তারা।