প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নফল নামাজ

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি মুসলমানরা ফরজের আগে বা পরে অতিরিক্ত কিছু সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করে থাকেন। এগুলো ফরজ নামাজের মতোই আদায় করা হয়, তবে রাকাত, সময় ও বিধানে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

এ ধরনের অতিরিক্ত নামাজ আদায় করা একটি ভালো অভ্যাস। কিছু আলেম বলেন, এসব নফল নামাজ আদায় করলে নামাজির জন্য বিশেষ উপকার ও সওয়াব লাভের আশা করা যায়।

ইসলামে নফল নামাজ

ইসলামী পরিভাষায় ফরজের বাইরে যে নামাজগুলো পড়া হয়, সেগুলোকে সুন্নত ও নফল বা অতিরিক্ত নামাজ বলা হয়। ফরজ, সুন্নত বা নফল সব নামাজ আদায়ের নিয়ম একই। তবে নিয়ত আলাদাভাবে করতে হয়।

প্রতিদিনের সুন্নত নামাজ

প্রতিদিন ফরজ নামাজের আগে-পরে ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে । সেগুলো হলো- জোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পরে দুই রাকাত। এশার পরে দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত। এর বাইরে রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করাও সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

নফল নামাজের ফজিলত

এ সম্পর্কে এক হাদিসে উম্মে হাবিবা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দিনে-রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়ে তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি বানানো হয়। জোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পরে দুই রাকাত। এশার পরে দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৬৩৬২)

ইশরাকের নামাজ

সূর্যোদয়ের প্রায় ২০ থেকে ৪৫ মিনিট পর সালাতুল ইশরাক আদায় করা যায়—মতভেদ অনুসারে সময়ের ভিন্নতা আছে।

দুই রাকাত করে এই নামাজ ৪ রাকাআত পর্যন্ত পড়া যায়। ইশরাক নামাজের পর কয়েক মিনিট পর্যন্ত দুনিয়াবি কাজে ব্যস্ত না হওয়া উত্তম। ইশরাক নামাজ পাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দান করে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। 

দুহা বা চাশতের নামাজ

এই নফল নামাজও পাপ ক্ষমা প্রার্থনার জন্য পড়া হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে দুপুরের আগে পর্যন্ত এ নামাজ পড়ার সময়। এর জন্য দুই রাকাত পড়তে হয়।

কোনো কোনো আলেম ইশরাক ও চাশত বা দুহার নামাজকে একই সময়সীমার অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। অনেক বর্ণনায় বলা হয়, সূর্য কিছুটা উঁচু হওয়ার পর এ নামাজ পড়লে অতিরিক্ত সওয়াব পাওয়া যায়। 

তাহাজ্জুদ নামাজ

তাহাজ্জুদ হলো রাতের নফল ইবাদত। ন্যূনতম দুই রাকাত, আর উত্তম হলো ১২ রাকাত আদায় করা।

এ নামাজে লম্বা কিরাত পড়া ভালো নাকি বেশি রাকাত পড়া ভালো, এ বিষয়ে আলেমদের বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে আলেমদের সর্বসম্মত মত হলো, নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়া অত্যন্ত উত্তম একটি আমল।

তাহিয়্যাতুল অজু

অজুর পর যে দুই রাকাত নামাজ পড়া হয়, সেটি হলো তাহিয়্যাতুল অজু। কিছু বর্ণনায় এ নামাজের ফলে জান্নাত ওয়াজিব হওয়ার কথা উল্লেখ আছে।

তবে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত বা দুপুরের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে এই নামাজ পড়া মাকরূহ।

তাহিয়্যাতুল মসজিদ

প্রতিদিন মসজিদে প্রবেশের পর দুই রাকাত নামাজ পড়ার কথা বলা হয়েছে হাদিসে। রাসুল (সা.) নিজে এই আমল করতেন, সাহাবিদেরও এই আমল করতে বলতেন। এই আমলটির বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

অন্যান্য নফল নামাজ

এছাড়াও তওবার নামাজ, সালাতুল হাজত, সালতুস শোকরসহ বিভিন্ন নফল নামাজ রয়েছে। এগুলো সাধারণ নফল নামাজ হিসেবে আদায় করা যায়। তবে শর্ত হলো- যখন নফল আদায় নিষেধ, সেই সময়গুলোতে কোনো নফল নামাজ আদায় করা যাবে না।