নভেম্বর মাসটি জ্যোতির্বিদ ও আকাশপ্রেমীদের জন্য হয়ে উঠতে যাচ্ছে এক রোমাঞ্চকর সময়। পুরো মাসজুড়ে রাতের আকাশে দেখা মিলবে একের পর এক মহাজাগতিক দৃশ্য উল্কাবৃষ্টি, গ্রহের বিশেষ অবস্থান এবং বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল চাঁদের ঝলক।
উল্কাবৃষ্টির রোমাঞ্চকর প্রদর্শনী
মাসের শুরুতেই দেখা দেবে টরিড উল্কাবৃষ্টি। নভেম্বরের ৪-৫ তারিখে দক্ষিণ টরিড এবং ১১–১২ তারিখে উত্তর টরিড উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে। এই উল্কাগুলো তুলনামূলক ধীরে পতিত হয় এবং অনেক সময় আকাশে উজ্জ্বল আগুনের গোলার মতো ঝলক ছড়ায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫-৭টি উল্কা দেখা যেতে পারে।
এরপর ১৭–১৮ নভেম্বর আকাশে দেখা দেবে বিখ্যাত লিওনিড উল্কাবৃষ্টি। এই সময় প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫টি দ্রুতগামী উল্কা চোখে পড়বে। যেহেতু সেই সময় চাঁদ থাকবে ক্ষীয়মাণ, আকাশ তুলনামূলক অন্ধকার থাকবে ফলে উল্কাগুলো আরও স্পষ্ট দেখা যাবে।
২১ নভেম্বর দেখা যাবে বিরল আলফা মোনোসেরোটিড উল্কাবৃষ্টি, যা কখনও কখনও প্রতি ঘণ্টায় হাজারেরও বেশি উল্কা প্রদর্শন করে। আর মাসের শেষে, ২৮ নভেম্বর, দেখা দেবে অরায়নিড উল্কাবৃষ্টি, যা তুলনামূলক নরম উজ্জ্বলতায় আকাশে জ্বলে ওঠে।
moon
বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল চাঁদ
নভেম্বরের ৫ তারিখে দেখা যাবে বছরের সবচেয়ে বড় ও উজ্জ্বল ‘বিভার সুপারমুন’। এই রাতে চাঁদ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৮% বড় এবং ১৬% বেশি উজ্জ্বল দেখাবে। ফলে রাতের আকাশে তৈরি হবে এক অনন্য আলোকমেলা।
Cosmic beauty
গ্রহরাজির বিশেষ অবস্থান
গ্রহ পর্যবেক্ষকদের জন্যও এই মাসে রয়েছে নানা আকর্ষণ। নভেম্বরের শুরুতে বুধ সূর্যাস্তের পর খালি চোখেই দেখা যাবে, কারণ তখন এটি আকাশে সবচেয়ে উঁচু অবস্থানে থাকবে। ২৫ নভেম্বর বুধ ও শুক্র একসঙ্গে পাশাপাশি দেখা যাবে, যা একটি দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য তৈরি করবে।
অন্যদিকে ২১ নভেম্বর, ইউরেনাস পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে যাকে জ্যোতির্বিদ্যার পরিভাষায় বলা হয় opposition। বৃষ নক্ষত্রমণ্ডলের কাছে এটি সহজেই দেখা যাবে দূরবীন ব্যবহার করলে।
২৩ নভেম্বর শনির বলয় আংশিকভাবে অদৃশ্য হয়ে যাবে, কারণ সেই সময় পৃথিবী শনির বলয়-সমতলে অবস্থান করবে।