বিজ্ঞানী মারি ক্যুরির জন্মদিন আজ

আজ (৭ নভেম্বর) মহান বিজ্ঞানী মারি স্ক্লদভস্কা ক্যুরির জন্মদিন। তিনি ছিলেন বিশ্বের প্রথম নারী নোবেল বিজয়ী এবং একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞানের দুইটি ভিন্ন শাখায় পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে দুইবার নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন।

১৮৬৭ সালের এই দিনে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে জন্মগ্রহণ করেন মারি ক্যুরি। দারিদ্র্য ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই কেটেছে তার শৈশব। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মারি পড়াশোনা করেছেন ওয়ারশর গোপন ভাসমান বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন।

১৮৯১ সালে ২৪ বছর বয়সে তিনি প্যারিসে পাড়ি জমান উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানেই তিনি পরবর্তীতে পিয়ের ক্যুরির সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত হন এবং তার সঙ্গেই জীবনসঙ্গী হিসেবে নতুন পথচলা শুরু করেন।

Marie Curie2

১৯০৩ সালে মারি ও পিয়ের ক্যুরি, এবং তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক অঁরি বেকেরেল যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। পরবর্তীতে ১৯১১ সালে মারি ক্যুরি এককভাবে রসায়নে নোবেল অর্জন করেন পিচব্লেন্ড থেকে রেডিয়াম ও পোলনিয়াম মৌল পৃথক করার জন্য।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাসপাতালগুলোতে এক্স-রে সরঞ্জামের অভাব দেখা দিলে মারি ক্যুরি নিজেই উদ্যোগ নেন। তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েই ২২০টি রেডিওলজি স্টেশন গড়ে তোলেনর মধ্যে ২০০টি স্থায়ী ও ২০টি ভ্রাম্যমাণ ইউনিট ছিল। এসব ইউনিটে প্রায় ১০ লাখ যুদ্ধাহত সৈন্যের এক্স-রে পরীক্ষা করা হয়, যার তত্ত্বাবধান তিনি নিজেই করতেন।

Marie Curie4

বিজ্ঞানের প্রতি নিষ্ঠার পাশাপাশি মাতৃভূমি পোল্যান্ডের প্রতি তার ভালোবাসাও ছিল গভীর। ফ্রান্সে নাগরিকত্ব অর্জন করলেও তিনি কখনো নিজের পোলিশ পরিচয় ভুলে যাননি। এমনকি তিনি তার মেয়েদের পোলিশ ভাষা শিখিয়েছিলেন এবং পোল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিলেন।

পরে তিনি ওয়ারশতে রেডিয়াম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। তার মেয়ে ইরিন জোলিও-ক্যুরি ও জামাতা ফ্রেডরিক জোলিওও তার পথ অনুসরণ করে রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।

Marie Curie3

মারি ক্যুরি নিজের জন্মভূমির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রথম যে মৌলটি আবিষ্কার করেন, তার নাম রাখেন ‘পোলনিয়াম’।

দীর্ঘ গবেষণার ফলে তেজস্ক্রিয়তার অতিরিক্ত সংস্পর্শে এসে তিনি অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানেমিয়াতে আক্রান্ত হন এবং ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই ফ্রান্সের একটি স্যানেটোরিয়ামে মৃত্যুবরণ করেন।