শীতকাল মানেই দীর্ঘ রাত আর পরিষ্কার আকাশ। আর এই সময়েই আকাশজুড়ে চলে এক মহাজাগতিক উৎসব উল্কাপাত বা উল্কাবৃষ্টির মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পৃথিবী পরপর একাধিক ধূমকেতু বা গ্রহাণুর বিচ্ছিন্ন অংশ (ধূলিকণা ও বরফকণা) ভেদ করে যায়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এসব কণা প্রবেশ করে জ্বলে ওঠার ফলেই সৃষ্টি হয় এই উল্কাবৃষ্টি। তাই শীতকালকে এই বিস্ময়কর দৃশ্য উপভোগের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলা হচ্ছে।
প্রধান উল্কাবৃষ্টির সময়সূচি
চলতি শীত মৌসুমে প্রধানত দুটি এবং আরও কয়েকটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে।
জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি – ডিসেম্বর
নাসার তথ্য অনুযায়ী, জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি এই মৌসুমের অন্যতম আকর্ষণ।
- ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর রাতে এটি সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যাবে।
- অন্ধকার আকাশ প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১২০টি পর্যন্ত উল্কা দেখা যেতে পারে।
- এই উল্কার উৎস হলো গ্রহাণু ৩২০০ ফেইথন।
- এই সময় আকাশে বৃহস্পতি ও চাঁদের নৈকট্য একটি অতিরিক্ত দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য তৈরি করবে।
কোয়াড্রান্টিড উল্কাবৃষ্টি – জানুয়ারি
- বছরের শুরুতে কোয়াড্রান্টিড উল্কাপাত দেখা যাবে।
- এটি ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে ১৬ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত চলবে।
- ৩–৪ জানুয়ারি রাতে এর সর্বোত্তম দৃশ্য উপভোগ করা যাবে।
- এটি খুব অল্প সময়ের জন্য আকাশে উল্কার ঝড়ের মতো দ্রুত উল্কাপাত সৃষ্টি করে।
অন্যান্য দুর্বল উল্কাবৃষ্টি
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ডেল্টা-ক্যানক্রিডসসহ আরও কিছু ছোট এবং অপেক্ষাকৃত দুর্বল উল্কাপাত চলতে থাকবে। এগুলো ঘণ্টায় কয়েকটি উল্কাই দেখা যেতে পারে।
কোথায় ও কীভাবে দেখবেন
এই মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগের জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই। খালি চোখেই উল্কাপাত দেখা যায়। শহরের কৃত্রিম আলো থেকে দূরে, যেমন-গ্রাম, উঁচু এলাকা বা খোলা মাঠ সবচেয়ে উপযোগী। চোখকে অন্ধকারে অভ্যস্ত করার জন্য আকাশে তাকানোর আগে অন্তত ১৫–২০ মিনিট সময় দেওয়া প্রয়োজন। শীতের রাতে তাপমাত্রা বেশি কমে যায়, তাই চাদর বা পর্যাপ্ত গরম কাপড় নিতে ভুলবেন না।
শীতে উল্কাপাত বেশি হওয়ার কারণ
শীতকালে পৃথিবী পরপর এমন কয়েকটি ধূমকেতুর রেখে যাওয়া ধূলিকণার পথের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে। শীতকালে রাত লম্বা হওয়ায় পর্যবেক্ষণের সুযোগ বেশি থাকে। একই সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার থাকায় উল্কাবৃষ্টি ভালোভাবে দেখা যায়।
যুদ্ধবিমান ইউরোফাইটার টাইফুনের বৈশিষ্ট্য
শিশুর স্মার্টফোন ব্যবহারে বাড়বে দুই ধরনের ঝুঁকি