ব্যক্তিগত ইভেন্টে পাকিস্তান সর্বশেষ কবে অলিম্পিকে কবে পদক জিতেছে তা একটা গবেষণার বিষয়। ১৯৯২ সালে দেশটি সর্বশেষ পদক জয় করেছিল। তবে ব্যক্তিগত ইভেন্টে নয়, দলীয় ইভেন্টে। পুরুষ হকিতে ব্রোঞ্জ জয় করেছিল। তার আগের আসরে হুসেন শাহ'র হাত ধরে পাকিস্তান পেয়েছিল বক্সিংয়ের ব্রোঞ্জ। এটাই ছিল গত ৬৪ বছরে অলিম্পিকে পাকিস্তানের ব্যক্তিগত ইভেন্টে সর্বশেষ পদক।
বিষ্ময়কর ব্যাপার হলেও সত্যি যে অলিম্পিকে পাকিস্তান ব্যক্তিগত ইভেন্টে কখনো সোনার পদকের দেখা পায়নি। এবার সেই সেই দুঃখ ঘুঁচেছে পাকিস্তানের। পেয়েছেন সোনার পদক। জ্যাভেলিন থ্রোতে আরশাদ নাদিম এনে দিয়েছেন অলিম্পিক ইতিহাসের পাকিস্তানের প্রথম সোনার পদক।
ক্রিকেট অঙ্গনে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই রয়েছে। জ্যাভেলিন থ্রোতে তেমন একটা লড়াই রয়েছে। সে লড়াইয়ে একদিকে আরশাদ নাদিম অন্যদিকে ভারতের নীরাজ চোপড়া। অলিম্পিকের গত আসরে অর্থাৎ ২০২০ সালের আসরে নাদিম পদক পাননি, হয়েছিলেন পঞ্চম। নারীজ হয়েছিলেন প্রথম, জিতেছিলেন সোনা। সর্বশেষ কমনওয়েলথ গেমসে নাদিম সোনা জিতেছিলেন। সেখানে অবশ্য নীরাজ ছিলেন না।
প্যারিসে তাই সবার নজর ছিল নাদিম ও নীরাজের দিকে। অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে নাদিম জিতেছেন সোনা। ৯২.৯৭ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেন তিনি। রেকর্ডের বিষয়ে নাদিম বলেন, যখনই জ্যাভেলিনটা ছুঁড়লাম, হাত থেকে বেরোনের পরই অনুভূতিটা হয়েছে। মনে হয়েছে অলিম্পিক রেকর্ড হতে পারে।'
টোকিও অলিম্পিকের কথা স্মরণ করে নাদিম বলেন, আমি টোকিওতে ভালো করার মতো যথেষ্ঠ ফিট ছিলাম। কিন্তু তখন ভালো করতে পারিনি। অলিম্পিকের পর কঠোর পরিশ্রম করি। এরপর কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয় করি। এরপর নিজের ছন্দ ধরে রাখতে অনুশীলনের মাত্রা বাড়িয়ে দেই। আজ দেশের জন্য সোনা জিতলাম।'
প্রতিপক্ষ সম্পর্কে নাদিম বলেন, আমরা ট্রাকের বাইরে ভালো বন্ধু। যে কারণে নীরাজ ভাই রুপা জিতেছে দেখে ভালো লাগছে।'
একটা সময় নাদিম ক্রিকেট খেলতেন। তবে জ্যাভেলিন ভালো লাগায় ক্রিকেট ছেড়ে দেন। তবে কয়েক মাস আগেও একটা নতুন জ্যাভেলিন কেনার সামর্থ্য ছিল না তার। পাকিস্তান সুপার লিগের দল মুলতান সুলতানস তার পাশে এসে দাঁড়ায়। পৃষ্ঠপোষকতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এমন অবস্থা থেকে উঠে এসেই সোনা জিতেছেন নাদিম।