নতুন অধিনায়ক, নতুন প্রত্যাশা-কিন্তু ফল সেই পুরোনো হতাশারই প্রতিচ্ছবি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ১-২ ব্যবধানে হার দিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের স্থায়ী ওয়ানডে নেতৃত্বে যাত্রা শুরু হলো হতাশায় মোড়ানো।
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে সিরিজ ছিল ১–১ সমতায়। সবকিছু নির্ভর করছিল তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের উপর, যেটি পরিণত হয় অঘোষিত ফাইনালে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচে ৯৯ রানে হেরে চূড়ান্তভাবে সিরিজ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ।
ম্যাচশেষে মিরাজ পরিষ্কার করে বলেন-মাঝের ওভারে জুটি গড়তে না পারাই ছিল বড় ব্যর্থতা। তিনি বলেন, ‘শুরুতে ও মাঝখানে আমরা কোনো জুটি গড়তে পারিনি। এখানেই আসলে সমস্যা হয়!’
এই সিরিজে একটি ম্যাচেও বাংলাদেশ ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি-যা কিনা পরিষ্কার করে ব্যাটিং দুর্বলতা তুলে ধরে। তিন ম্যাচে তিন রকম ব্যর্থতা, কিন্তু মূল সমস্যা একটাই-ইনিংস লম্বা করতে না পারা।
যদিও মিরাজ সিরিজ শেষে ‘তরুণ দল’ হিসেবে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশকে, বাস্তবতা হলো, দলে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছিলেন। তাসকিন, লিটন, মোস্তাফিজ খেলছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। মিরাজ নিজেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় এক দশক পার করেছেন। তবুও ধারাবাহিকতার অভাব এড়ানো যায়নি। মিরাজের ভাষায়, ‘মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের, আমারও আরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমি নিজেও অনেক বল খেলতে পারিনি। এটা আরও ভালো হতে পারত।’
তাওহিদ হৃদয় একমাত্র ব্যাটার যিনি ধারাবাহিকতার কিছুটা ছাপ রেখেছেন। তৃতীয় ম্যাচে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দুটি উল্লেখযোগ্য জুটি গড়েন—পারভেজের সঙ্গে ৪২ ও মিরাজের সঙ্গে ৪৩ রানের। কিন্তু কোনো জুটিই বড় হয়নি। এদিকে শ্রীলঙ্কা তিন উইকেট হারানোর পর ১২৪ রানের বিশাল জুটি গড়ে ফেলে মেন্ডিস ও আসালাঙ্কা, যা ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি এই সিরিজে ছিল মাত্র ৪৩-এমন পারফরম্যান্সে জয় খুঁজে পাওয়াটা অলীক স্বপ্নই ছিল। সবকিছু মিলিয়ে, এই সিরিজে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটিং দক্ষতায় এগিয়ে ছিল, আর বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে পরিকল্পনায়, ব্যাটিংয়ে ও মানসিক দৃঢ়তায়। মিরাজ আশাবাদী ‘আমাদের দল এখনো তরুণ, সময় দিলে তারা ভালো খেলবে। আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে।’