বিসিবি নির্বাচন স্থগিত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি ঢাকার ক্লাব সংগঠকদের

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের ক্রিকেট অঙ্গন। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। অভিযোগ, প্রভাব ও হস্তক্ষেপের অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে এবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন ঢাকার ক্লাব সংগঠকরা।

রোববার দুপুরে বিসিবির কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম বাবুর স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয় ড. ইউনূসের কাছে। এতে চলমান সংকট কাটাতে তিন দফা পরামর্শ ও দাবি উত্থাপন করেছেন সংগঠকরা। তাদের মূল দাবি- বিসিবির বর্তমান নির্বাহী পর্ষদের মেয়াদ কিছুটা বাড়িয়ে নির্বাচন পুনঃতফসিল করা, কাউন্সিলরশিপ বিতর্ক নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং বিকল্প হিসেবে অ্যাডহক কমিটির তত্ত্বাবধানে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে পরবর্তী সময়ে ভোটগ্রহণের আয়োজন করা।

সংগঠকরা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের আগে কাউন্সিলর মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা হস্তক্ষেপ করেছেন। তাদের দাবি, প্রথমে ১৫টি ক্রিকেট ক্লাবকে অনুমতি দেওয়া হলেও পরে হঠাৎ করে ওই অনুমোদন বাতিল করা হয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপে। এতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংগঠকদের ভাষায়, ‘এটি পরিকল্পিতভাবে কিছু পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার প্রয়াস।’

গতকাল শনিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা ক্লাব সংগঠকরা এক সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দেন- তাদের দাবি পূরণ না হলে ঘরোয়া ক্রিকেটসহ বিসিবির সব কার্যক্রম বর্জন করা হবে। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্টভাবে পরিচালিত করা হচ্ছে, এবং নিরপেক্ষতার বদলে গোষ্ঠীগত স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সভাপতির ঘনিষ্ঠ কিছু মহল এমন এক প্রার্থীকেই পুনরায় পর্ষদে আনার চেষ্টা করছে, যিনি অতীতে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ক্লাব প্রতিনিধিরা জানালেন, ‘সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিসিবির নির্বাহী পর্ষদে ফেরানোর এই প্রয়াস গঠনতন্ত্রের ৯ ও ১০ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, ঢাকার ক্লাবগুলোর অবদানই দেশের ক্রিকেটের প্রাণভোমরা। প্রিমিয়ার, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ মিলিয়ে বছরে অন্তত শত কোটি টাকা খরচ করে এই ক্লাবগুলো ক্রিকেটকে চালিয়ে রাখে। অথচ সেই ক্লাবগুলোর মতামত বা প্রতিনিধিত্বের পথই এবার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তারা বাধ্য হচ্ছেন আসন্ন ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করতে।

বিসিবির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামীকাল, সোমবার। কিন্তু এর ঠিক আগে পর্যন্তও প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও তফসিল নিয়ে তীব্র নাটকীয়তা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী তামিম ইকবালসহ মোট ১৭ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।