হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ, রেকর্ড গড়া জয় আফগানিস্তানের

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে যা ঘটল, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অনাকাঙ্ক্ষিত অধ্যায় হয়ে থাকবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছে ঠিক ২০০ রানে, যা এই দুই দলের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার। এটি আফগানিস্তানের রেকর্ড গড়া এক জয়!

২৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য সামনে পেয়ে কখনোই প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত দিতে পারেনি বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে সাইফ হাসান কিছুটা চেষ্টা করলেও বাকিরা যেন দ্রুত সাজঘরে ফেরার প্রতিযোগিতায় ছিলেন। দলীয় ৩৫ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর শুরু হয় ব্যাটিং ধস। একে একে ফিরতে থাকেন শান্ত, হৃদয়, মিরাজ, মুশফিক। বল হাতে আফগানিস্তানের তরুণ পেসার বিলাল সামি হয়ে ওঠেন ত্রাস। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বল হাতে ঝলক দেখিয়ে তুলে নেন ৫ উইকেট।

বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র লড়াই করেছেন সাইফ হাসান। ৫৪ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে ছিল ধৈর্য, ছিল কিছুটা আগ্রাসনও। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় তার লড়াই বৃথা যায়। শেষ ১১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানো দল যে কতটা হতাশ, তার চেয়ে বড় প্রমাণ আর কিছু হতে পারে না। ২৭.১ ওভারে অলআউট হয়ে বাংলাদেশ থেমে যায় ৯৩ রানে।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান শুরু করে দাপুটে ভঙ্গিতে। গুরবাজ ও ইবরাহিমের ওপেনিং জুটিতে আসে ৯৯ রান। গুরবাজ আউট হন ৪২ রান করে, কিন্তু ইবরাহিম জাদরান যান আরও দূর। ১১১ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলে রান আউট হন তিনি। মাঝের সময়ে সাইফ হাসান ফিরিয়ে দেন আতাল, শহীদি ও ইকরামকে।

তবে ইনিংসের শেষভাগে মোহাম্মদ নবীর ব্যাটে আসে ঝড়। শুরুতে সতর্ক থাকলেও শেষ দিকে মারমুখী হয়ে উঠেন তিনি। মাত্র ৩৭ বলে হাঁকান ৬২ রান, যার মধ্যে ছিল একাধিক ছক্কা। এক ওভারে তুলে নেন ২৫ রান, যার ওপর ভর করেই ৫০ ওভারে আফগানিস্তান পায় ২৯৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ।

সিরিজের আগের দুই ম্যাচেও আফগানিস্তান জয় পেয়েছিল নিশ্চিত দাপটের সঙ্গে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে বাংলাদেশ যেভাবে ভেঙে পড়েছে, তা ক্রিকেটীয় ব্যর্থতার চেয়েও বেশি-একটি মানসিক ও সাংগঠনিক ভরাডুবির পরিচয়।

সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশড হয়ে বাংলাদেশ এখন শুধুই প্রশ্নবিদ্ধ নয়, বরং সামনে কঠিন কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি-এ দলের ভবিষ্যৎ রূপরেখা, নেতৃত্ব, প্রস্তুতি এবং আত্মবিশ্বাস, সবকিছুতেই এখন বড় রকমের ধাক্কা!