মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ২০ নভেম্বর ২০২৫ সালের সকালটি পরিণত হয়েছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে। আগের দিন ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই মুশফিকুর রহিমকে ঘিরে আশা, উত্তেজনা আর প্রতীক্ষায় কাটিয়েছিল পুরো দেশ। শততম টেস্টে মাত্র এক রান দূরে থাকা একজন ব্যাটসম্যানের অপেক্ষা স্বভাবতই বিরল, আর মুশফিকের মতো দেশসেরা ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে সেটি হয়ে উঠেছিল আবেগে ভরা এক বিশেষ উপলক্ষ।
নতুন দিনের আলোয় যখন খেলা শুরু হলো, তখনই ঘটল সেই প্রতীক্ষিত ঘটনাটি। অতিরিক্ত কোনোরকম জাঁকজমক নয়; বরং তার স্বভাবসিদ্ধ শান্ত স্বভাবেই বলটিকে আলতোভাবে গাইড করে পূর্ণ করলেন সেঞ্চুরি। স্ট্যান্ডজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল করতালি, সতীর্থদের অভিনন্দন আর দর্শকদের উচ্ছ্বাস। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে অংশ নেওয়া এবং একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা—এমন অর্জন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন হয়ে রইল।
মুশফিকুর রহিমের দীর্ঘ ক্যারিয়ার সবসময়ই অধ্যবসায়, দৃঢ়তা ও পেশাদারিত্বের উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তাই এই ব্যক্তিগত মাইলফলক তার জন্য শুধুই আরেকটি পরিসংখ্যান নয়; বরং দুই দশকেরও বেশি সময়ের কঠোর পরিশ্রম আর অবিরাম নিবেদনের ফল। তার এই সাফল্য ব্যক্তিগত অর্জনের সীমানা ছাড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যও গর্বের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব ক্রিকেটে যে অভিজাত তালিকায় আজ তার নাম যুক্ত হলো, সেটি ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের এক সুশোভিত গ্রুপ—কলিন কাউড্রে, জাভেদ মিয়াঁদাদ, গর্ডন গ্রিনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম-উল হক, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, ডেভিড ওয়ার্নার, জো রুট কিংবা রিকি পন্টিং, যিনি তার শততম টেস্টে দুই সেঞ্চুরি করে অদ্বিতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন। সেই তালিকার সঙ্গে এবারের মুশফিকুর রহিমের নাম।