মেঘে ঢাকা বিকেলে সূর্যোদয়: ২২ বছর পর চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

মাঠে তারা নামেনি, তবু জয় তাদেরই। প্রতিপক্ষের হারে এসেছে স্বপ্নের সাফল্য। আবাহনীর হারের মধ্য দিয়ে ২২ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল মোহামেডানের সামনে। শর্ত ছিল একটি-আজ ফর্টিসের কাছে হারতে হবে আবাহনীকে। আর তা-ই হয়েছে। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ফর্টিস এফসি ২-১ গোলে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেডকে। এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে মতিঝিলের সাদা-কালো শিবির। ১৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে মোহামেডান। সমান ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ২৮-তিন ম্যাচ বাকি থাকলেও শিরোপার সমীকরণে তারা আর নেই।

ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিট পর বৃষ্টির সঙ্গে বাজ পড়ে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। মাঠে জমে যায় পানি। এরপর খেলা শুরু হলেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি কোনো দল। তবে ১৯তম মিনিটেই পেনাল্টি থেকে ফর্টিস এগিয়ে যায় ওমর জোবের গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের দল নিয়েও দ্বিতীয় গোল করে ফর্টিস। আবাহনী একটি গোল শোধ দিলেও তা যথেষ্ট হয়নি।

২০০২ সালে ঢাকার শীর্ষ লিগ জয়ের পর দীর্ঘ দুই দশক অপেক্ষায় ছিল মোহামেডান। একসময় তারা দেশের সেরা ক্লাব হলেও আধুনিক যুগে বারবার হোঁচট খেয়েছে। কখনো অবনমন আতঙ্ক, কখনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এবার সেই অতীত ছাপিয়ে তারা ফিরেছে নব চেতনায়। আলফাজ আহমেদের কোচিংয়ে গড়ে ওঠা দলটি পেশাদারিত্ব, একাগ্রতা ও দৃঢ় মানসিকতায় তুলে নিয়েছে সাফল্যের চূড়ায়।

মোহামেডান ক্লাবে তখন এক অন্যরকম উৎসব। খেলোয়াড়রা মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখেই চিৎকারে ফেটে পড়েছেন। ক্লাব স্টাফ, সমর্থকরা পতাকা উড়িয়েছেন উল্লাসে। সানডে, দিয়াবাতে, সুমন রেজা, নকীবসহ সবাই ছিলেন আনন্দের সঙ্গী। এই জয় শুধুই একটি মৌসুমের নয়-এ এক নতুন যুগের সূচনা।

মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা মেলার মতোই এসেছে এই জয়। তাতে ঘরোয়া ফুটবলও যেন ফিরে পেল এক হারানো উত্তাপ।