আজকের প্রযুক্তির যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI) আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবে প্রযুক্তির এই অভাবনীয় অগ্রগতি যেমন সুবিধা দিয়েছে, তেমনি কিছু গুরুতর ঝুঁকি ও অপরাধের আশঙ্কাও তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কাজ আছে যা ভুলেও এআই দিয়ে করা উচিত নয়। তাই কিছু ক্ষেত্রে এআই ব্যবহারে সতর্ক হওয়া জরুরি।
চলুন জেনে নেই কোন কাজগুলো এআই দিয়ে করবেন না
হ্যাকিং বা সাইবার অপরাধে ব্যবহার
এআই দিয়ে পাসওয়ার্ড অনুমান, স্ক্রিপ্ট তৈরি বা হ্যাকিং টুল বানানো একেবারেই বেআইনি।
ভুয়া ডকুমেন্ট বা সার্টিফিকেট তৈরি
এআই দিয়ে ভুয়া পরিচয়পত্র, সার্টিফিকেট বা সরকারি ডকুমেন্ট তৈরি করা গুরুতর অপরাধ।
মানুষকে ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়া
এআই দিয়ে তৈরি ভয়ভীতি দেখানোর মতো ছবি, অডিও বা ভিডিও তৈরি করা মানসিক ক্ষতি ও আইনি জটিলতা আনতে পারে।
অশ্লীল বা সহিংস কনটেন্ট তৈরি করা
যে কোনো ধরনের পর্নোগ্রাফি বা সহিংস ভিডিও/ছবি তৈরি ও ছড়ানো বেআইনি এবং নৈতিকভাবে ভুল।
ডিপফেক বানানো
কোনো সেলিব্রিটি বা সাধারণ মানুষের অনুমতি ছাড়া তার ডিপফেক ভিডিও বা ছবি বানানো একটি গুরুতর অপরাধ।
বেআইনি কাজ করা
যেকোনো ধরনের অবৈধ বা বেআইনি কাজের জন্য এআই ব্যবহার করলে আপনি বড় বিপদে পড়বেন।
পরীক্ষায় নকল করা
স্কুল-কলেজের অ্যাসাইনমেন্ট বা পরীক্ষার জন্য সরাসরি নকল করলে আপনি ধরা পড়বেনই। কারণ কোনটা এআই দিয়ে লিখা সেটা মানুষ সহজেই এখন বুঝে।
ব্রেকিং নিউজ যাচাই
ব্রেকিং নিউজ বা সংবেদনশীল তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে এআই এর কথা বিশ্বাস করবেন না।
জুয়া খেলা
জুয়া খেলার জন্য এআই এর কাছ থেকে কৌশল বা পরামর্শ নেওয়া বোকামি।
আইনি চুক্তিপত্র তৈরি
উইল বা যেকোনো আইনি চুক্তিপত্র এআই দিয়ে তৈরি করলে তার কোনো আইনি ভিত্তি থাকবে না (এখন পর্যন্ত এর )।
শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা
ডাক্তারের বদলে এআইকে বিশ্বাস করে নিজের চিকিৎসা করা মারাত্মক হতে পারে।
আর্থিক বা ট্যাক্সের পরিকল্পনা
ব্যক্তিগত টাকা-পয়সা বা ট্যাক্সের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে এআই এর পরামর্শ নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
ব্যক্তিগত বা গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ
এআই ব্যবহার করে কাউকে না জানিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ বা ব্যবহার করা (যেমন: ফেস রিকগনিশন দিয়ে ট্র্যাক করা) বেআইনি হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন
মানসিক সমস্যায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিয়ে এআই এর উপর নির্ভর করা বিপজ্জনক।
জরুরি নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত
আগুন লাগলে বা বিপদের মুহূর্তে কী করবেন, তা ওই মুহুর্তে এআইকে জিজ্ঞেস করতে যাবেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই একটি শক্তিশালী হাতিয়ার- কিন্তু তা যেন নৈতিকতার সীমা ছাড়িয়ে না যায়।
সৃজনশীলতা, শিক্ষায় সহায়তা, গবেষণা, এবং কাজের অটোমেশন- এসব ভালো কাজে এআই ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই নতুন প্রযুক্তিকে বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করুন।