ল্যাব টেস্ট ছাড়াই ওমেগা-৩ নামের ডিম বাজারে

ওমেগা-৩, ভিটামিন ই, অর্গানিক নামে বিভিন্ন কোম্পানির যে-সব ডিম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, তার কোনোটি সরকারি কোনো ল্যাবটেস্ট ছাড়াই বাজারজাত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরে ওমেগা-৩, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই সমৃদ্ধ অর্গানিক ডিম বিক্রির বিষয়ে বিভিন্ন সুপার শপ, ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় উঠে আসে।

মতবিনিময় সভায় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ.এচই.এম সফিকুজ্জামান বলেন, সাধারণ ডিমের চেয়ে অর্গানিক ডিমের দামের পার্থক্য দশ টাকা, তাই অর্গানিকের নামে ভোক্তা কী খাচ্ছে তা উৎপাদনকারী, বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান উভয়কে নিশ্চিত করতে হবে। সব বাবা-মা তাদের সন্তানকে গুণগত মানসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে চান। সেখানে মান সমৃদ্ধের নামে যেন তারা কোনোভাবে প্রতারিত না হন সেই বিষয়টি ভোক্তা অধিদপ্তর নিশ্চিত হতে চায়। 

এসব ক্ষুদ্র ডিম উৎপাদনকারী সমিতির সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, বাজারে সব ডিমেই ওমেগা-৩ থাকে। এখানে আলাদাভাবে ভিটামিন ই, অর্গানিক বলে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে। ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বড় সাইজের ডিম আলাদা করে ওমেগা-৩ নামে বাজারজাত করছে। প্রতিটি ডিমে অনেক ধরনের ভিটামিন অন্তর্ভুক্ত থাকে, সেখানে আলাদা করে বলার কিছু নেই,  শুধু বাড়তি মুনাফার লোভে প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন নামে বাজারে ডিম বিক্রি করছে। 

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান উৎপাদনকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চান কীভাবে ওমেগা-৩ ডিম উৎপাদন করা হয়? আলাদা কি খাওয়ানো হয়, কোনো ধরনের তদারকি আছে কি খাবারগুলোতে?

জবাবে ওমেগা-৩ ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেনেটা, প্যারাগনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নির্দিষ্ট কারখানায় গুণগত মানসম্পন্ন ফিড খাইয়ে এ ডিম উৎপাদন করা হয়। তবে কোনো কোম্পানি বা সরকারি কিংবা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো ল্যাব থেকে কোনো ধরনের পরীক্ষা করানো হয়নি। রেনেটা নিজেদের ল্যাবে পরীক্ষার দাবি করলেও প্যারাগন দু’বছর আগে এক পরীক্ষা করিয়ে সেই রিপোর্ট দিয়েই ওমেগা-৩ ডিম উৎপাদনের দাবি করছে।

এসময় ভোক্তা অধিদপ্তরের  ডিজি বলেন, ওমেগা-৩ ভিটামিন ই সমৃদ্ধ অর্গানিক ডিম পরীক্ষা করার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় একটি ল্যাব থাকলেও চার বছরে সেখানে মাত্র একটি পরীক্ষা হয়েছে, তাও ভোক্তা অধিদপ্তরের চাপের কারণে। এই বিষয়ে সবাইকে আন্তরিক হবে হবে। বাজারে এসব নামে ডিম বিক্রি করার আগে সরকারি লিস্টেড কোনো ল্যাব থেকে পরীক্ষা করে তা বাজারজাত করতে হবে, একইসাথে সুপার শপগুলোকে কোনো সাপ্লায়ার পণ্য বিক্রি করার আগে ল্যাবটেস্ট করতে হবে। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষে থেকে কমিটি করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। 

মতবিনিময় সভায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের,  ক্যাবের, স্বপ্ন সুপার শপ, মিনা বাজারের প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন।